مؤسسة الفردوس
আল ফিরদাউস
Al Firdaws
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
في اللغة البنغالية
বাংলা ভাষায়
In the Bengali Language
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
المذاكرة التربوية- الحلقة ٣
ادعوا لجميع المسلمين من عمق القلب
তরবিয়াতি মুযাকারা সিরিজ ৩
সকল মুসলমানের জন্য প্রানখুলে দোয়া করুন
Tarbiyati Muzakara Series-3
Pray openly for all Muslims
لمولانا عبد الله حذيفة حفظه الله
মাওলানা আব্দুল্লাহ হুযাইফা হাফিযাহুল্লাহ
By Mawlana Abdullah Huzaifa Hafizahullah
للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading
روابط بي دي اب
PDF (728 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৭২৮ কিলোবাইট]
https://archive.org/details/3.-sokol-musolmaner-jonno-doa-korun
https://mega.nz/file/eVpSzbbC#QbBWK9OJSa2unu_tcIdSQIiRjLKs41LuwS7l8uEsYNU
https://anonfiles.com/b791G0h8p8/3._SokolMusolmanerJonnoDoaKorun_pdf
https://www.sendspace.com/file/f2og11
https://top4top.io/downloadf-17547838e1-pdf.html
https://mymegacloud.com/index.php?dl=08099c21b21bb3836f1a7bc6fbabf4f5
https://www.gulf-up.com/cvd7zwmc0l7q
روابط ورد
Word (227 KB)
ওয়ার্ড [২২৭ কিলোবাইট]
https://archive.org/details/3.-sokol-musolmaner-jonno-doa-korun_202010
https://archive.org/download/3.-sokol-musolmaner-jonno-doa-korun_202010
/3.%20SokolMusolmanerJonnoDoaKorun.docx
https://www.sendspace.com/file/37ys8i
https://top4top.io/downloadf-1754rjeve1-docx.html
https://anonfiles.com/Xe84Gdh2pa/3._SokolMusolmanerJonnoDoaKorun_docx
https://mega.nz/file/TQokCb4S#KfCLojle6jgrrXHmNfVzSXwSQo_M7kvDi1P2dp19_AE
https://mymegacloud.com/index.php?dl=69e92a553a9d903388f2128ca6c130ac
https://www.gulf-up.com/fd7gl6oz23op
روابط الغلاف- ١
book Banner [140 KB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [১৪০ কিলোবাইট]
https://mega.nz/file/mVhWxLpB#cBsZH9uvSwd8Qoko0D0jQWJELXjxIDllYu4W5CJzB40
https://mymegacloud.com/index.php?dl=84f5f0c219acede67951a90339c56dd7
روابط الغلاف- ٢
Banner [104 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [১০৪ কিলোবাইট]
https://mega.nz/file/HZoATBCS#li1Gz5bNL1NrBfqkaeWTCw5b8VRzl0Mec9KMyDXBqmU
https://mymegacloud.com/index.php?dl=0e529c3182dfd43ad98fdeb7b5e47639
*********************
তরবিয়তি মুযাকারা সিরিজ : ০৩
সকল মুসলমানের জন্য
প্রাণখুলে
দোয়া করুন
মাওলানা আব্দুল্লাহ হুযাইফা হাফিযাহুল্লাহ
সূচিপত্র
সালাফদের অতি মূল্যবান তিনটি বাণী.. 4
সকল মুসলমানের জন্য প্রাণখুলে দোয়া করুন. 8
কয়েক সেকেন্ডে কোটি কোটি নেকি... 9
ইমাম ইবনুল কাইয়িম রহ. এর অতি মূল্যবান তিনটি বাণী.. 14
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم
اَلْحَمْدُ لله رَبِّ الْعَالَمِيْنَ، وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى أَشْرَفِ الْأَنْبِيَاءِ وَالْمُرْسَلِيْنَ، وَعَلَى أله وَأَصْحَابِهِ وَمَنْ تَبِعَهُمْ بِإِحْسَانٍ إِلَى يَوْمِ الدِّيْنِ، أَمَّا بَعْدُ
মুহতারাম ভাইয়েরা, আজকে ভাইদের সাথে ছোট একটি বিষয় নিয়ে কিছু কথা মুযাকারা করব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা আমাকে ইখলাস ও ইতকানের সাথে কথাগুলো বলার এবং আমাদের সবাইকে সে মোতাবেক আমল করার তাওফিক দান করুন, আমীন।
মুহতারাম ভাইয়েরা, এই মাত্র কিছু দিন হলো মাহে রমযান নামের মহামূল্যবান মেহমান আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে সালাফদের অতি মূল্যবান তিনটি বাণী পেশ করছি।
প্রথম বাণীটি হযরত আব্দুল আজিজ বিন আবু রাওয়াদ রহ.-এর।
তিনি বলেন,
أدركتهم (السلف الصالح) يجتهدون في العمل الصالح، فإذا فعلوا وقع عليهم الهمّ ! أيقبل منهم أم لا؟
আমি সালাফদের দেখেছি, তাঁরা নেক আমল করার প্রতি খুব যত্নবান ছিলেন। তবে কোনো নেক আমল সম্পন্ন করে এই ভেবে চিন্তিত থাকতেন যে, আমলটি কবুল হবে তো?
দ্বিতীয়টি হযরত আলী রাযি.-এর।
তিনি বলতেন,
كونوا لقبول العمل أشد اهتماماً منكم بالعمل، ألم تسمعوا قول الحق عز وجل : إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ مِنْ الْمُتَّقِينَ . المائدة : ٢٧
তোমরা আমল করার চেয়ে আমল কবুল হওয়ার প্রতি বেশি গুরুত্ব দেবে। আল্লাহ তা'আলার এই কথা কি তোমরা শোনোনি যে, তিনি বলেছেন,
إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ مِنْ الْمُتَّقِين .
আল্লাহ তাআলা কেবলমাত্র মুত্তাকীদের কাছ থেকেই কবুল করেন। (সূরা মায়েদা (৫) : ২৭)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে মুত্তাকীদের মধ্যে শামিল করুন আমীন।
তৃতীয়টি হযরত মুআল্লা বিন ফযল রহ.-এর।
তিনি বলেছেন,
كانوا يدعون الله تعالى ستة أشهر أن يبلّغهم رمضان، ويدعونه ستة أشهر أن يتقبّل منهم
আমাদের সালাফগণ (রমযানের) ছয় মাস আগ থেকে রমযান পাওয়ার জন্য দোয়া করতে থাকতেন আর রমযানের ছয় মাস পর পর্যন্ত রমযানের আমলগুলো যেন কবুল হয় সে জন্য দোয়া করতে থাকতেন।-লাতায়েফুল মাআরেফ : ১৪
মুহতারাম ভাইয়েরা, রমযানে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ভাঙ্গাচুরা যা-ই কিছু আমল করার তাওফিক দিয়েছেন তিনি যেন মেহেরবানি করে সেই আমলগুলো কবুল করে নেন সে জন্য আমরা খাস ভাবে দোয়ার ইহতেমাম করি।
আমরা নিজের জন্য দোয়া করি, অন্য ভাইদের জন্য দোয়া করি, সকল মুসলমানদের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ তাআলা যেন নিজ দয়া ও করুণায় আমাদের সবার আমলগুলো কবুল করে নেন।
কমপক্ষে এ দোয়াটার খুব ইহতিমাম করি।
رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ … … وَتُبْ عَلَيْنَآ إِنَّكَ أَنتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি আমাদের পক্ষ থেকে (এ আমলগুলো) কবুল করে নিন, নিশ্চয়ই আপনি সব কিছু শুনেন, সব কিছু জানেন … …
আমাদের প্রতি দয়া করুন, নিশ্চয়ই আপনি অত্যন্ত দয়ালু (বা তাওবা কবুলকারী) ও করুনাময়। [সূরা বাকারা (০২) : ১২৭, ১২৮]
দ্বিতীয় যে কথাটি আরয করতে চাচ্ছি তা হল, আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমের বিভিন্ন জায়গায় প্রকৃত ঈমানদারদের অনেক গুণের কথা উল্লেখ করেছেন। এর দ্বারা উদ্দেশ্য, আমরাও যেন সেসব গুণ নিজের মধ্যে ধারণ করি। আমাদের মধ্যেও যেন ওই গুণগুলো আসে। তাহলে তাঁরা যেমন আল্লাহর প্রিয়পাত্র হয়েছেন, তাঁর কাছে প্রশংসিত হয়েছেন, আমরাও তাঁদের মতো প্রিয়পাত্র হতে পারব, প্রশংসিত হতে পারব ইনশাআল্লাহ।
কুরআনে উল্লেখিত ঈমানদারদের নানান গুণের মধ্যে অতি মূল্যবান একটি গুণ হল, মুমিন ভাইদের জন্য দোয়া করা।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَالَّذِينَ جَاءُوا مِنْ بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِلَّذِينَ آَمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ
আর যারা তাদের পরে এসেছে, তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এবং আমাদের ওই সব ভাইদেরকে যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন (সবাইকে) ক্ষমা করুন এবং আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের প্রতি কোন বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়। সূরা হাশর (৫৯) : ১০
কারো অনুপস্থিতিতে তাঁর জন্য দোয়া করা, একজন মুমিনের অন্তর পরিচ্ছন্ন হওয়ার আলামত। কারো অন্তরে তাঁর ভাইয়ের প্রতি হিংস-বিদ্বেষ থাকলে সে তার জন্য দোয়া করতে পারে না।
তাছাড়া অন্যের জন্য দোয়া করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের জন্য সেই দোয়া কবুল হওয়ার নিশ্চয়তা লাভ করতে পারি। সুতরাং অন্যের জন্য দোয়া করা এমন একটি গুণ, এমন একটি আমল, যার দ্বারা আমরাই বেশি উপকৃত হই।
সহী মুসলিমে হযরত আবু দারদা রাযি. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَا مِنْ عَبْدٍ مُسْلمٍ يَدْعُو لأَخِيهِ بِظَهْرِالغَيْبِ إِلاَّ قَالَ المَلَكُ : وَلَكَ بِمِثْل»
যখনই কোনো মুসলমান তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দুআ করে, সঙ্গে সঙ্গে (তার মাথার কাছে নিযুক্ত) একজন ফেরেশতা (তাকে লক্ষ্য করে) বলেন, তোমার জন্যও এমনই হোক। সহী মুসলিম : ২৭৩২
সহী মুসলিমেরই অন্য বর্ণনায় এসেছে,
دَعْوَةُ المَرْءِ المُسْلِمِ لأَخِيهِ بِظَهْرِ الغَيْبِ مُسْتَجَابَةٌ، عِنْدَ رَأسِهِ مَلَكٌ مُوَكَّلٌ كُلَّمَا دَعَا لأَخِيهِ بِخَيْرٍ قَالَ المَلَكُ المُوَكَّلُ بِهِ: آمِينَ، وَلَكَ بِمِثْلٍ
কোনো মুসলমান তার ভাইয়ের অবর্তমানে তার জন্য দুআ করলে তা কবুল হয়। তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকেন, যখনই সে তার ভাইয়ের জন্য নেক দুআ করে, তখনই ওই ফেরেশতা বলেন, ‘আমীন এবং তোমার জন্যও এমনই হোক। সহী মুসলিম : ২৭৩৩
মুহতারাম ভাই একটু ভাবুন, ওই ফেরেশতার কাজ কেবল এটাই যে, আমরা যখনই আমাদের কোনো ভাইয়ের জন্য দোয়া করব তখন তিনি বলবেন, ‘আমীন এবং তোমার জন্যও এমনই হোক।
আমরা যখন বললাম, হে আল্লাহ! আপনি অমুক ভাইকে মাফ করে দিন, তাঁকে নিরাপদে রাখুন, সব ধরনের মসিবত থেকে তাঁকে রক্ষা করুন, তিনি যেন কোনও ধরনের পরীক্ষার সম্মুখীন না হন, তখন ওই ফেরেশতা বলেন, ‘আমীন এবং তোমার জন্যও এমনই হোক।
আমরা গুনাহগার। আমরা গুনাহগার হয়ে এক ভাইয়ের জন্য দোয়া করব, বিনিময়ে নিষ্পাপ ফেরেশতা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আর ফেরেশতার দোয়া তো অবশ্যই কবুল হবে।
এ জন্যই সালাফদের মধ্যে কেউ কেউ যখন নিজের জন্য কোনো দোয়া করার ইচ্ছা করতেন তখন সেই দোয়াটি অন্যদের জন্য করতে থাকতেন।
মুহতারাম ভাইয়েরা, আমরা আমাদের অন্যান্য আমলের সাথে এ আমলটিরও ইহতিমাম করি ইনশাআল্লাহ, এটি খুবই দামী একটি আমল।
আমরা আমাদের দোয়াগুলোতে শুধু নিজের কথাই বলব না, বরং তার সাথে আমাদের ভাইদের কথাও বলব, আমাদের সকল মুসলমান ভাই-বোনদের কথাও বলব। এর ফায়েদা সবার আগে আমরা নিজেরাই পাব ইনশাআল্লাহ।
আমরা দুনিয়ার সকল মুসলমানের জন্যই প্রাণখুলে দোয়া করব, আমাদের সব কুরবানি তো ইসলাম ও মুসলমানদের রক্ষার জন্যই, তাঁরা যেন দুনিয়া-আখেরাত দুনো জাহানে সুখে থাকে, শান্তিতে থাকে, এ উদ্দেশ্যেই তো আমাদের সকল কুরবানি।
এ পথে আসার কারণে আমাদের কোনো কোনো ভাইকে ফেরারি জীবন কাটাতে হচ্ছে, এ পথে না এলে নিজ নিজ জায়গায় তাঁরাও প্রতিষ্ঠিত হতে পারতেন ইনশাআল্লাহ। আমাদের এসব কুরবানি তো ইসলাম ও মুসলমানদের জন্যই, আল্লাহর দীনের জন্যই। এ জন্য ভাই, আমরা মন খুলে সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করব। আল্লাহ যেন সারা দুনিয়ার সকল মুসলমানকে হেদায়েত দান করেন, দ্বীন-দুনিয়ার সকল ফেতনা থেকে সবাইকে হেফাযত করেন। বিশেষ করে আমাদের ওলামায়ে কেরাম ও দ্বীনদার শ্রেণীকে যেন আল্লাহ সকল ফেতনা থেকে হেফাযত করেন। আল্লাহ যেন তাঁদেরকে আমাদের সাহায্যকারী বানিয়ে দেন।
হযরত উবাদা বিন সামেত রাযি. থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنِ اسْتَغْفَرَ لِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ كَانَ لَهُ بِكُلِّ مُؤْمِنٍ وَمُؤْمِنَةٍ حَسَنَةٌ.
যে ব্যক্তি মুমিন নর-নারীর জন্য ইসতিগফার করে, তার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবর্তে একটি করে নেকি লেখা হয়। মাজমাউয যাওয়ায়েদ : ১০/২১৩ (হাদিসটি হাসান, সনদ জায়্যিদ)
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. এ হাদীসটির ওপর নিয়মিত আমল করতেন। প্রতিদিনের দোয়া ও আযকারে মধ্যে তিনি সকল মুসলিম ভাইদের জন্য অবশ্যই দোয়া করতেন। এটি ছিল তাঁর প্রতিদিনের আমল।
এ আমলটি আমরাও কি করতে পারি না ভাই?
আমরা আমাদের সকাল বিকালের আযকারের সাথে এটিও শামিল করে নিলাম। কোনো কোনো বর্ণনায় ২৭ বার পড়ার বিশেষ ফযিলতের কথা এসেছে, তবে হাদীসটি যেহেতু ততটা নির্ভরযোগ্য না, তাই কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা ছাড়া যতটুকু হয় প্রতিদিনই এটি করলাম।
একটু কল্পনা করুন ভাই, বর্তমানে সারা বিশ্বে কতজন মুসলমান আছে? কোটি ছাড়িয়ে যাবে। তাই না?
আমরা যদি প্রতিজনের পরিবর্তে একটি করে নেকি লাভ করি তাহলে আমাদের নেকির পরিমাণ দাঁড়াবে কম করে হলেও এক কোটি! এরপর এক কোটিকে দশ দিয়ে গুণ দিন, কত নেকি হবে? কত কোটি হবে?
এটি তো শুধু জীবিতদের হিসেবে। আর আমরা যদি দোয়াটা এভাবে করি,
اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِجَمِيْعِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ، اَلْأَحْيَاءِ مِنْهُمْ وَالْأَمْوَاتِ.
হে আল্লাহ, জীবিত-মৃত সকল মুমিন নর-নারীকে ক্ষমা করে দিন।
তাহলে জীবিত-মৃত সকলকেই শামিল করবে।
এবার আপনি নেকির পরিমাণটা একটু কল্পনা করুন। হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে আজ পর্যন্ত মুসলমানের সংখ্যা কত! আমরা যদি তাদের সকলের জন্য দোয়া করি, কতক্ষণ সময় ব্যয় হবে? এক দু সেকেন্ড। তাই না? কিন্তু এর ফলে আমাদের আমলনামায় মুহূর্তেই কোটি কোটি নেকি লেখা হয়ে যাবে!!
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই বরকতময় হাদীসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন। এটি যেন আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।
আমরা আমাদের সকল মুসলমান ভাইয়ের জন্য দোয়া করাকে নিজেদের দোয়া ও মুনাজাতের অংশ বানিয়ে নিই। প্রতিদিনই আমরা এ দোয়াগুলো করি,
اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِجَمِيْعِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ، اَلْأَحْيَاءِ مِنْهُمْ وَالْأَمْوَاتِ.
হে আল্লাহ, জীবিত-মৃত সকল মুমিন নর-নারীকে ক্ষমা করে দিন।
اَللّهُمَّ ارْحَمْهُمْ.
হে আল্লাহ, তাদের প্রতি দয়া করুন।
اَللّهُمَّ اعْفُ عَنْهُمْ.
হে আল্লাহ, তাদের পাপ মোচন করুন।
اَللّهُمَّ اهْدِهِمْ.
হে আল্লাহ, তাদেরকে হেদায়েত দান করুন।
اَللّهُمَّ اشْفِ مَرْضَاهُمْ وَجَرْحَاهُمْ.
হে আল্লাহ, তাদের মধ্যে যারা অসুস্থ, আহত, তাদের সবাইকে সুস্থতা দান করুন।
اَللّهُمَّ فُكَّ أَسْرَاهُمْ.
হে আল্লাহ, তাদের মধ্যে যারা বন্দি, তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন।
اَللّهُمَّ انْصُرِالْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنْهُمْ وَاجْعَلْنَا لَهُمْ أَوْلِيَاءَ وَأَنْصَارًا.
হে আল্লাহ, তাদের মধ্যে যারা দূর্বল অসহায়, আপনি তাদেরকে সাহায্য করুন এবং আমাদেরকে তাদের অভিবাবক ও সাহায্যকারী বানান।
সাধারণত দেখা যায়, আমরা যখন কোনো বিপদে পড়ি বা কোনো পেরেশানির সম্মুখীন হই তখন শুধু নিজের জন্য দোয়া করি। অন্য সময় অন্য ভাইদের জন্য দুআ করলেও এ সময় অন্যদের জন্য দোয়া করার কথা ভুলে যাই। অথচ তখন আরও বেশি করে অন্য ভাইদের জন্য দোয়া করা উচিত। তাহলে এর ওসিলায় আল্লাহ তাআলা আমাদের বিপদ দূর করবেন, আমাদের পেরেশানি দূর করবেন ইনশাআল্লাহ।
সারকথা হল, আমরা সব সময়ই আমাদের সকল মুসলমান ভাইদের জন্য দোয়া করব। বিশেষ করে আমাদের মাযলুম ও বন্দী ভাই-বোনদের জন্য, মুজাহিদীন ও মুহাজিরীন ভাই-বোনদের জন্য, যাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে, নানান উপায়ে কষ্ট দেয়া হচ্ছে।
ভাই, আমরা নিজেরাও একে অন্যের জন্য দোয়া করব। আমরা মাসউলরা আমাদের মামুর ভাইদের জন্য, মামুররা আমাদের মাসউল ভাইদের জন্য, বিশেষভাবে আমাদের উমারাদের জন্য।
আমরা সবাই সবার জন্য দোয়া করব, আল্লাহ যেন আমাদের সকল ভাইকে নিরাপদে রাখেন, সব ধরনের ফেতনা থেকে হেফাযত করেন এবং শাহাদাত পর্যন্ত তাওহীদ ও জিহাদের পথে অবিচল রাখেন। এটি একদিন বা দুদিনের আমল যেন না হয় ভাই, এটি যেন আমাদের সব সময়ের আমল হয়।
আমরা আমাদের ভাইদেরকে দোয়া ছাড়া আর কীইবা দিতে পারব ভাই বলুন? আর এই যে দোয়া, এটি কি কোনো সাধারণ জিনিস ভাই?
আল্লাহর কসম! দোয়া সাধারণ জিনিস নয় ভাই, অনেক অনেক বড় জিনিস। আপনি দোয়া করে আপনার এক ভাইকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যেতে পারেন, সঙ্গে আপনি নিজে তো যাবেনই ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন আমীন।
একটি প্রসিদ্ধ হাদীস, আমরা সবাই হয়তো জানি।
عَنْ أُسَامَةَ بنِ زَيدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم : «مَنْ صُنِعَ إِلَيْهِ مَعْرُوفٌ، فَقَالَ لِفاعِلهِ: جَزَاكَ اللهُ خَيراً، فَقَدْ أَبْلَغَ فِي الثَّنَاءِ». رواه الترمذي، وقال: حديث حسن صحيح
হযরত উসামা বিন যায়েদ রাযি থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কারো কোনো উপকার করা হল। তখন সে ওই উপকারকারীকে লক্ষ্য করে ‘জাযাকাল্লাহু খায়রান’ (আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করেন) বলে দোয়া করল, তাহলে সে উপকারকারীর পূর্ণাঙ্গ প্রশংসা করল। জামে তিরমিযী : ১৯৫৮ (হাদীসটি সহীহ)
দেখুন ভাই, এখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন, কেউ যদি উপকারকারীকে লক্ষ্য করে ‘জাযাকাল্লাহু খায়রান’ বলে দোয়া করে দেয় তাহলে এতেই সে তার পূর্ণাঙ্গ প্রশংসা করে ফেলল।
লক্ষ্য করুন ভাই, ছোট্ট এই বাক্যটি বলা কী এত কঠিন কাজ! অথচ এটি বললেই আপনি আপনার উপকারকারীর পূর্ণাঙ্গ প্রশংসা করলেন বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জানাচ্ছেন। বুঝা গেল, আন্তরিক ভাবে কারো জন্য দোয়া করা সাধারণ জিনিস নয়।
সুনানে আবু দাউদে হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাযি. থেকে এমনই আরেকটি হাদীস এসেছে। হাদীসটির শেষাংশে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَن صَنَعَ إِليكُم مَعرُوفًا فَكَافِئُوه، فَإِن لَم تَجِدُوا مَا تُكَافِئُوا بِهِ فَادعُوا لَهُ حَتَّى تَرَوا أَنَّكُم قَد كَافَأتُمُوهُ.
কেউ তোমাদের প্রতি কোনো উপকার করলে তাকে এর বদলা দাও। বদলা দেয়ার মতো কিছু না পেলে তার জন্য এত বেশি পরিমাণে দোয়া কর, যেন তোমাদের মনে হয় যে, তোমরা তার বদলা দিতে পেরেছো। সুনানে আবু দাউদ : ১৬৭২
এ হাদীস থেকেও বুঝা যাচ্ছে, কারো জন্য দোয়া করা সাধারণ কিছু নয়।
এখন যে করোনা চলছে, আল্লাহ যেন সকল মুসলমানকে বিশেষ করে সারা দুনিয়া ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমাদের ভাইদেরকে যেন এ থেকে নিরাপদে রাখেন, এ জন্য আমরা খাসভাবে দোয়া করি।
আমরা যখনই কারো ব্যাপারে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানব, সাথে সাথে তার জন্য দোয়া করব, তিনি যেমন মুসলমানই হোক, এতে হয়তো আল্লাহ তাআলা দয়া করে আমাদেরকে এই পরীক্ষা থেকে হেফাজত করবেন ইনশাআল্লাহ।
এভাবে আমরা অন্যের জন্য দোয়া করার আমলটি করতে থাকলে নিজেরাই এর ফায়েদা উপলব্ধি করতে পারব। আপনি নিজের ভিতর অন্য রকম এক আত্মিক প্রশান্তি অনুভব করবেন। আপনার অন্তরে কোনো মুসলমানের প্রতি কোনো ধরনের হিংসা থাকবে না, বিদ্বেষ থাকবে না। কারো ব্যাপারে অকল্যাণ কামনা আপনার অন্তরে জায়গাই পাবে না।
ভাই, আল্লাহ না করুন যদি কখনও আমাদের কোনো ভাইয়ের প্রতি কারো মনে একটু কেমন কেমন লাগে, তিনি মাসউল হতে পারেন বা মামুর হতে পারেন। কখনও কোনো কারণে হতে পারে। তখন আমরা ওই ভাইয়ের জন্য খুব বেশি করে দোয়া করতে থাকব ইনশাআল্লাহ, এতে আমাদের মন একদম সাফ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ
দেখুন ভাই, দোয়া তো হয় গোপনে, ভাই না ভাই? দোয়াতে কী কোন রিয়া থাকে, যখন তা গোপনে করা হয়?
তো আপনি আপনার ভাইয়ের জন্য দোয়া করছেন, এর অর্থ তাঁর প্রতি আপনার অন্তর একদম সাফ।
আপনার অন্তরে তাঁর প্রতি একটুও দাগ নেই। আর এটাই তো কাম্য।
আমরা ‘বুনইয়ানুম মারসূস’-সীসাঢালা প্রাচীর তো তখনই হতে পারব যখন আমাদের কারো অন্তরে কোনো ভাইয়ের প্রতি বিন্দু পরিমাণও কোন দাগ থাকবে না, আমরা যখন শাহাদাতের আগ মুহুর্তেও নিজে পিপাসিত থেকে আমার ভাইকে পানি পান করাতে পারব।
আর এটি তখনই হবে যখন জীবিত অবস্থায় আমাদের অন্তর আমাদের সকল ভাইয়ের প্রতি একদম সাফ থাকবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে। স্বচ্ছ ও পরিছন্ন অন্তর অনেক বড় দৌলত। আল্লাহর অনেক বড় একটি দান। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এই নেয়ামত লাভে ধন্য করেন আমীন।
আজ তো ভাই জুমআর দিন, তাই জুমআর দিন সম্পর্কে কিছু কথা আরয করেই কথা শেষ করছি ইনশাআল্লাহ।
জুমআর দিন আমরা যত বেশি পারি দুরুদ শরীফ পড়ার চেষ্টা করি, সাথে সুরা কাহাফ তো অবশ্যই পড়ব ইনশাআল্লাহ। পাশাপাশি দোয়ার খুব বেশি ইহতিমাম করি ভাই। কারণ, হাদীসে এসেছে-
إنَّ في الجمُعةِ لساعَةٌ لا يوافِقها مسلم يسألُ اللَّهَ فيها خيرًا إلا أعطاهُ إيَّاهُ.
জুমআর দিন এমন একটি সময় আছে যে সময়ে কোনো মুসলমান আল্লাহর কাছে (দুনিয়া-আখেরাতের) যে কোনো কল্যাণ চায় আল্লাহ তাকে তা-ই দেন। (সহী মুসলিম : ৮৫২)
এ সময়টি কখন? এ ব্যাপারে সহী মুসলিমের অন্য এক হাদীসে এসেছে,
هِيَ مَا بَيْنَ أَنْ يَجْلِسَ الإِمَامُ إِلَى أَنْ تُقْضَى الصَّلاَة.
জুমআর দিনের বিশেষ সময়টি হচ্ছে, ইমাম মিম্বরে বসা থেকে নামায শেষ করা পর্যন্ত৷ (সহী মুসলিম : ১৮৬০)
জামে তিরমিজীর এক হাদীসে এসেছে,
الْتَمِسُوا السَّاعَةَ الَّتِي تُرْجَى فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ إِلَى غَيْبُوبَةِ الشَّمْسِ .
জুমআর দিনের যে সময়টিতে (দোআ কবূল হওয়ার) আশা করা যায় তাকে আসরের পর হতে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত তালাশ কর। (জামে তিরমিজী : ৪৮৯)
আমরা দুটো সময়ই দোয়ার খুব ইহতিমাম করি। প্রথম সময় শুধু মনে মনে আর দ্বিতীয় সময় তো মুখেও করা যাবে।
ইমাম ইবনুল কাইয়িম রহ. এর অতি মূল্যবান তিনটি বাণী উল্লেখ করেই কথা শেষ করছি,
এক.
لو صلّى العبد عليه (محمد صلى الله عليه وسلم) بعدد أنفاسه، لم يكن موفيًا لحقّه .
কেউ যদি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি তার নিঃশ্বাসের সমপরিমাণ দুরুদও পড়ে তবুও তাঁর যা হক ও পাওনা তা সে আদায় করতে পারবে না।-জালাউল আফহাম : ৩৪৪
দুই.
يَوْمُ الْجُمُعَةِ يَوْمُ عِبَادَةٍ، وَهُوَ فِي الْأَيّامِ كَشَهْرِ رَمَضَانَ فِي الشّهُورِ، وَسَاعَةُ الْإِجَابَةِ فِيهِ كَلَيْلَةِ الْقَدْرِ فِي رَمَضَانَ.
জুমআর দিনটি হল ইবাদতের দিন। দিনের মধ্যে জুমআর দিনটি এমন যেমন মাসের মধ্যে রমজান মাস। আর জুমআর দিনের দোয়ার কবুল হওয়ার সময়টি রমজানের মাসের শবে কদরের মতো।-যাদুল মাআদ : ১/৩৮৬
তিন.
إذا رئيت الشخص يكثر من قول اللهُمَّ إِنَّي أَسْأَلُكَ الْفِرْدَوْسَ الْأَعْلَى مِنَ الْجَنَّةِ فاعلم أن الله قد كتبها له.
আপনি যখন কাউকে এই দোয়াটি বেশি বেশি করতে দেখেন তো নিশ্চিত থাকুন যে, আল্লাহ তার জন্য তা লিখে রেখেছেন।
اللهُمَّ إِنَّي أَسْأَلُكَ الْفِرْدَوْسَ الْأَعْلَى مِنَ الْجَنَّةِ.
হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তর-জান্নাতুল ফিরদাউস চাই।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে প্রকৃত ঈমানদারদের সকল গুণাবলী নিজের মধ্যে ধারণ করার তাওফীক দান করুন এবং শাহাদাত পর্যন্ত জিহাদ ও শাহাদাতের পথে অবিচল থাকার তাওফীক দান করুন এবং আমাদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন আমীন।
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وأصحابه أجمعين
وآخردعوانا أن الحمد لله رب العالمين
************
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة الفردوس للإنتاج الإعلامي
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশন
In your dua remember your brothers of
Al Firdaws Media Foundation