اداره الحکمہ
আল হিকমাহ মিডিয়া
Al Hikmah Media
پیش کرتے ہیں
পরিবেশিত
Presents
بنگالی ترجمہ
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
عنوان:
শিরোনাম:
Titled:
۷۱سے۲۱: بنگلہ دیش تاریخ کے کس دوراہے پر؟
৭১ থেকে ২১ ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ
71 to 21 Bangladesh in the hearing of history
از أوستاد أبو أنور الهندي حفظہ اللہ
উস্তাদ আবু আনওয়ার আল-হিন্দি হাফিযাহুল্লাহ
By Ustad Abu Anwar Al-hindi Hafizahullah
ڈون لوڈ كرين
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading
پی ڈی ایف
PDF (1.1 MB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [১.১ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/6DRSWDHBYAFJCwM
https://archive.org/download/71-to-21-bangladesh/71To21BangladeshAlhikmahmedia.pdf
https://cloud.degoo.com/share/dHWbR-VzoYCWVGQx-aExsQ
https://www.mediafire.com/file/nduxmzr5wv9dzng/71To21BangladeshAlhikmahmedia.pdf/file
https://mega.nz/file/IhJnzCoQ#5k6dMBoAbZ-6tX4D8XIQ3feYBCnbWo4dNliPvuIKBHk
ورڈ
WORD (796 KB)
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৭৯৬ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/3LJPXk7zn3LW7Q4
https://archive.org/download/71-to-21-bangladesh/71To21BangladeshAlhikmahmedia.docx
https://cloud.degoo.com/share/FX5D67uz2mEjGZeiNXOuRw
https://www.mediafire.com/file/qteyo7pun6mhmev/71To21BangladeshAlhikmahmedia.docx/file
https://mega.nz/file/FtZhiQKb#qO1ohqAowRmredBM8VIza_D_S_pjG92SjD60oY_hitw
غلاف
book cover [1.8 MB]
বুক কভার [১.৮ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/YqgYoWjyrjs6YMj
https://archive.org/download/71-to-21-bangladesh/71To21BangladeshAlhikmahmedia%20cover.jpg
https://cloud.degoo.com/share/zaB4XEujT4xKJJ-TSd8u5A
https://www.mediafire.com/view/9slpqh8tsycqftp/71To21BangladeshAlhikmahmedia_cover.jpg/file
https://mega.nz/file/t9ZxWQbT#1HzctsKxpVUk4a2BoYmlorEgHEHdTNU6KyNzg_owEgc
بينر
banner [844 KB]
ব্যানার [৮৪৪ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/9s8ePGzdwZAg3E3
https://archive.org/download/71-to-21-bangladesh/71To21BangladeshAlhikmahmediabanner.jpg
https://cloud.degoo.com/share/xKbMdpiZjj5xLHGOeL3mqQ
https://www.mediafire.com/view/ye8dmtz7dzfl8s7/71To21BangladeshAlhikmahmediabanner.jpg/file
https://mega.nz/file/94QjwCSZ#1cmaGa0La8jD52F9gTtPIkMgE1ZdHkP1Cb_b1jkrUvc
***********
৭১ থেকে ২১
ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ
উস্তাদ আবু আনওয়ার আল-হিন্দি হাফিযাহুল্লাহ
ভূমিকা
সম্মানিত তাওহীদবাদী ভাই ও বোনেরা! মুহতারাম উস্তাদ আবু আনওয়ার আল-হিন্দি হাফিযাহুল্লাহ’র ‘৭১ থেকে ২১: ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ’ গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা পুস্তিকা আকারে আপনাদের সম্মুখে বিদ্যমান। গুরুত্বপূর্ণ এই লেখায় লেখক বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে এর প্রতিটি সেক্টরে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারতের নানামুখী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের পর্দা উন্মোচিত করেছেন। ভারত কীভাবে এই ভূখণ্ডে নানামুখী আগ্রাসন চালাচ্ছে, সেটি সংক্ষেপে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন। নিঃসন্দেহে এই প্রবন্ধে পাঠক ও পাঠিকাগণ নিজেদের করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনাও পাবেন ইনশা আল্লাহ।
এই লেখাটির উর্দু সংস্করণ ইতিপূর্বে ‘জামাআত কায়িদাতুল জিহাদ উপমহাদেশ শাখা’র অফিসিয়াল উর্দু ম্যাগাজিন ‘নাওয়ায়ে গাযওয়ায়ে হিন্দ’ এর গত মে - জুলাই ২০২১ ইংরেজি সংখ্যায় “৭১ সে ২১: বাংলাদেশ তারিখ কে কিস দাওরাহে পার?” ( ۷۱ سے۲۱: بنگلہ دیش تاریخ کے کس دوراہے پر؟) শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল। অতীব গুরুত্বপূর্ণ এই লেখাটির মূল বাংলা সংস্করণটি লেখক আমাদের কাছে প্রেরণ করেছেন, যা এখন পুস্তিকা আকারে আপনাদের সম্মুখে বিদ্যমান। আলহামদু লিল্লাহ ছুম্মা আলহামদু লিল্লাহ।
আম-খাস সকল মুসলিম ভাইদের ও বোনদের জন্য এই রিসালাহটি ইনশাআল্লাহ উপকারী হবে। সম্মানিত পাঠকদের কাছে নিবেদন হল- লেখাটি গভীরভাবে বারবার পড়বেন, এবং নিজের করণীয় সম্পর্কে সচেতন হবেন ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ এই রচনাটি কবুল ও মাকবুল করুন! এর ফায়েদা ব্যাপক করুন! আমীন।
আবু যুবাইদা
১৬ই রবিউস সানী, ১৪৪৩ হিজরি
২২শে নভেম্বর, ২০২১ ইংরেজি
২০২১ এর ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাসিনা সরকার যাদের আমন্ত্রন জানায় তাদের মধ্যে প্রধান ছিল গুজরাটের কসাই নরেন্দ্র মোদি। মোদির এ সফরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করে। এ প্রতিবাদে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের পাশাপাশি শামিল হয় বিভিন্ন ধর্মনিরপেক্ষ দল এমনকি বামপন্থীরাও। এ থেকেই প্রমাণ হয় বাংলাদেশের হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডার বিরোধিতা কতো ব্যাপক।
প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও হাসিনা সরকার মোদিকে দাওয়াত দিয়ে আনার কারণ স্পষ্ট। বর্তমানে হাসিনা ক্ষমতায় টিকে আছে, মোদির আশীর্বাদে এবং হাজী শরীয়তুল্লাহর মাটিকে হিন্দুত্ববাদী এজেন্ডার কাছে বর্গা দিয়ে। আবার মোদির জন্যও এই সফরের গুরুত্ব ছিল বহুমাত্রিক। একদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য মতুয়া হিন্দুদের মন জয়ের চেষ্টা চালায় মোদি। অন্যদিকে হিন্দুত্ববাদীদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব রাখা সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পূজা দিয়ে অখন্ড ভারতের এক প্রতীকী বার্তাও হয়তো দিতে চেয়েছে মোদি। মুশরিক হিন্দুদের কল্পকাহিনী অনুযায়ী–‘দেবতা বিষ্ণু যখন দেবী সতির দেহকে ৫১ টুকরো করে, তখন তার একটি টুকরো পরে এই স্থানে। আর এখানেই গড়ে উঠে যশোরেশ্বরী কালীমন্দির।
মোদি বিরোধী প্রতিবাদের অগ্রভাগে ছিল বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ তাওহিদি মুসলিমরা। ২৬ শে মার্চ জুমার নামাযের পর কোন দলের ব্যানার ছাড়াই স্বতস্ফূর্তভাবে জাতীয় মসজিদের মুসল্লিরা মোদি ও বাংলাদেশে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। আর তখনই তাদের উপর আক্রমন শুরু করে হুকুমের গোলাম পুলিশ বাহিনী এবং আওয়ামী গুন্ডা বাহিনী। অভূতপূর্ব স্পর্ধা দেখিয়ে তারা সরাসরি মাসজিদের ভিতরে প্রবেশ করে মুসল্লিদের আঘাত করে। জাতীয় মসজিদের ভিতর টিয়ার গ্যাস এবং গুলি ছুড়ে। মোদির সন্তুষ্টির জন্য বাংলাদেশের প্রধান মসজিদে ঢুকে মুসলিমের উপর আক্রমনের এই নির্মম দৃশ্য থেকে প্রমাণ হয়ে যায় যে বাংলাদেশে এখন হিন্দুত্ববাদের প্রক্সি (proxy) শাসন চলছে। বাংলার মাটি আজ আবারো অবরুদ্ধ। বাংলার নিয়ন্ত্রন আজ আবারো দখলদারের হাতে।
জাতীয় মসজিদের হামলার পর সারা দেশের মুসলিম প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় আলেম-উলামা, তালেবুল ইলম এবং সাধারণ মুসলিম জনতা বিক্ষোভ করে হাটহাজারী, বিবাড়িয়া (যে অঞ্চলের নাম এখন শহীদবাড়িয়া প্রস্তাব করা হয়েছে), মধুপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। সর্বত্র মুসলিমদের উপর হামলা চালায় হুকুমের গোলাম পুলিশ, র্যাব, বিজিবি বাহিনী এবং তাদের সাথে আওয়ামী গুন্ডারা। ভারতের ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের আদলে আলেম-ওলামাকে বলপ্রয়োগে এবং ভীতিপ্রদর্শনপূর্বক ‘জয় বাংলা’ এবং ‘জয় বঙ্গন্ধু’ স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়। সারা দেশে কমপক্ষে ২১ জন মুসলিমকে হত্যা করা হয়। সর্বজনশ্রদ্ধেয় বর্ষীয়ান আলেমরা বুলেটের আঘাতে রক্তাক্ত হন। আহত হন শত শত। গ্রেফতার হন অনেকে। মোদিকে সন্তুষ্ট করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে হাসিনা।
ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে বাংলাদেশের মুসলিমদের উপর পাকিস্তানী বাহিনী হামলার করেছিল। তার ঠিক ৫০ বছর পর ২০২১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের মুসলিমদের উপর আক্রমন করে হিন্দুত্ববাদের আজ্ঞাবহ বান্দী হাসিনা।
অস্ত্রের আগ্রাসনের পর শুরু হয় মিডিয়া আগ্রাসন। যাদের উপর আক্রমন চালালো হল তাদেরকে আগ্রাসনকারী প্রমানে উঠেপরে লেগে যায় সেক্যুলার মিডিয়া। নির্লজ্জ মিথ্যাচারে তাগুতী হত্যাকান্ডকে বৈধতা দেয় মিডিয়া। আর মুসলিমদের আত্মরক্ষাকে বর্ণনা করলো ‘তাণ্ডব’ নামে। শুধু তাই না, দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের একটি অংশ রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে হাসিনাকে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে আহবান করে। বাংলাদেশের এই সেক্যুলার মিডিয়া আমেরিকান এবং ভারতীয় মিডিয়ার মতোই অপরাধীর অপরাধের বৈধতা দেয়, আর আক্রান্তের আত্মরক্ষাকে অপরাধ বলে সাব্যস্ত করে। বাংলাদেশের সেক্যুলার মিডিয়ার মিথ্যাচার প্রমানের জন্য এটুকু বলাই যথেষ্ট যে, মিডিয়া যখন মোদি-হাসিনার আগ্রাসনকে বৈধতা দেওয়ায় ব্যস্ত, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর মুখে প্রকৃত সত্য ফাঁস হয়ে যায়, যখন সে মন্তব্য করে – মোদি বাংলাদেশে দাঙ্গা বাধিয়ে এসেছে।
২৬শে মার্চের আগ্রাসনের পর ভারতীয় নির্দেশে আলেম-উলামা এবং ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ব্যাপকভাবে দমনে উঠেপড়ে লেগে যায় হাসিনা সরকার। মাদ্রাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধার নাটক, আলেম-উলামাদের চরিত্র হননের ঘৃণ্য চেষ্টা, মিডিয়া ট্রায়াল ও প্রপাগান্ডা, ব্যাপক ধরপাকড়–বহুমাত্রিকভাবে বাংলাদেশের মুসলিমদের বিরুদ্ধে এখন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে হাসিনা সরকার। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন খরচ যোগাতেই হিমশিম খাচ্ছে। এমন অবস্থাতেই সরকার কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে, এবং বিশেষভাবে মাদরাসাগুলো বন্ধ করাচ্ছে। শুধু তাই না দেশের বিভিন্ন স্থানে থানায় থানায় এলএমজি বসানো হয়েছে। যার থেকে বুঝা যায়, সরকার আলেম-উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের শক্তভাবে দমনের করতে চায়, এবং এই জন্য প্রয়োজনে ব্যাপক শক্তিপ্রয়োগেও তারা প্রস্তুত।
তাগুত হাসিনা সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের হিন্দুত্ববাদী শাসন এখন বাংলাদেশের মুসলিমদের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে ৩টি অক্ষের মাধ্যমে। একটি অক্ষ সামরিক ও পেশীশক্তি, একটি অক্ষ আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক, একটি অক্ষ রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক।
সামরিক ও পেশীশক্তির অক্ষ গঠিত হয়েছে, সামরিক বাহিনী, বিভিন্ন বেসামরিক বাহিনী ও এজেন্সি এবং আওয়ামী গুন্ডাবাহিনীর মাধ্যমে। এর মধ্যে আছে
আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক অক্ষে আছে বাংলাদেশের কাযযাব মিডিয়া এবং সেক্যুলার বুদ্ধিজীবি ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন। একদিকে এরা সরকারের সব অপরাধের সাফাই গাচ্ছে, হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের বাস্তবতা মানুষের সামনে গোপন করছে এবং সাধারণ মানুষকেই অপরাধী সাব্যস্ত করছে। অন্যদিকে মিডিয়া, এবং সেক্যুলার বুদ্ধিজীবি অঙ্গন ভারতীয় সাংস্কৃতিক আধিপত্যের এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে। তারা বাংলাদেশের সমাজে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যেখানে একটি মুসলিম ভূখন্ড হবার পরও ইসলামী চেতনাকে উগ্রবাদ, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ বলে নাকচ করে দেওয়া যাচ্ছে। দাড়ি, টুপি, বোরকা, নিক্বাব, বিয়ের শরয়ী বিধানসহ বিভিন্ন বিষয়কে অবলীলায় আক্রমন করা যাচ্ছে। এরা একই হিন্দুত্ববাদী শাসনের বৈধতা দিচ্ছে, এবং বাংলাদেশের ইসলামী পরিচয় মুছে দেওয়ার জন্য কাজ করছে।
আর সর্বশেষ অক্ষটি হল রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক অক্ষ। এই অক্ষে হাসিনাকে মূল সহায়তা দিচ্ছে ভারত। কারণ বাংলাদেশের হাসিনার বিন্দুমাত্র গ্রহণযোগ্যতা এখন আর নেই। সে টিকে আছে বন্দুক এবং দিল্লীর জোরে। মোদির সফরের পর পরিস্থিতি ঠান্ডা হবার আগেই ৫ দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছে ভারতীয় সেনাপ্রধান। একই সময়ে এসেছে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। যা থেকে প্রতীয়মান হয় বাংলাদেশের উপর হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় আগ্রাসন যুগের হুবাল আমেরিকার মৌন সম্মতিতেই হচ্ছে। চীনকে ঠেকাতে মরিয়া আমেরিকা, যেকোন মূল্যে এ অঞ্চলে ভারতকে তার পাশে চায়। তাই মুখে মানবতা আর ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ালেও ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনে আমেরিকার আপত্তি নেই বরং সমর্থন আছে। বিমানবন্দরে নেমে হাসিনা সরকারের মুসলিম নামধারী মন্ত্রীকে সালামের বদলে নমস্কার জানিয়ে জন কেরি হয়তো এই বার্তাই বাংলাদেশের মুসলিমদের সামনে স্পষ্ট করে দিল।
বর্তমানে বাংলাদেশ এক ঐতিহাসিক মোড়ে এসে দাড়িয়েছে। মোদির সফর উপলক্ষে বাংলাদেশে যা হয়ে গেল, তা এক ঐতিহাসিক ঘটনা এবং এর সাথে এ ভূখন্ডের অতীত ঘটনাবলীর মধ্যে হয়তো কেবল ২০১৩, ১৯৬৯, এবং ১৯৫২ এর তুলনা চলে। ব্যক্তিগতভাবে এই লেখকের ধারণা, সার্বিক বিবেচনায় এই ঘটনাপ্রবাহ হয়তো ২০১৩ এর ঘটনাবলীর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ ভূখন্ডের ওপর ভারতীয় আধিপত্য এবং হিন্দুত্ববাদী নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আর কখনো প্রকাশ্যে এতো স্পষ্টভাবে এ ভূখন্ডের মুসলিমদের সামনে আসেনি। সাধারন মানুষের কাছে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে– হাসিনা সরকার তাদেরকে হিন্দুত্ববাদীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। এবং হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসী বাহিনী হিসাবে কাজ করছে। আওয়ামী লীগ সুস্পষ্ট ও খুলাখুলিভাবে দ্বীন ইসলাম এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বাংলাদেশ আজ হিন্দুত্ববাদী শক্তির করদ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। পুরো বাংলাদেশ যেন এক কারাগার। এখানে মানুষ ঈমান, জান, মাল, সম্মান এমনকি মাসজিদেরও নিরাপত্তা নেই। এই জনপদে শান্তি নেই, বাতাসে কেবল অজানা আশঙ্কা।
বাংলাদেশ আজ এমন এক অবস্থায় এসে দাড়িয়েছে যা সব ধরণের মানুষকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন এবং ভারতের আধিপত্যবাদের সাথে যে বোঝাপড়া করতে হবে, এটা আজ মানুষের কাছে পরিস্কার। এবং ইতিহাসের এই স্রোত তার নিজস্ব গতিতে চলবে। পুরো বাংলার ঈমানদার মুসলিমরা আজ ক্ষোভে ফুঁসছে। অপমানের নীল আগুনে দগ্ধ হচ্ছে। একই সাথে তাঁদেরকে গ্রাস করেছে হতাশা। গতানুগতিক নেতৃবৃন্দ, আন্দোলন এবং দল এ ভূখন্ডের মুসলিমদের সম্মান, মর্যাদা ও ঈমান রক্ষায় পুরোপুরিভাবে ব্যার্থ, এ উপলব্ধি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। পুরো কওম আজ ক্রুদ্ধ, অপমানিত, দিশেহারা এবং দুঃখজনকভাবে অপ্রস্তুত। কে তাদের হয়ে রুখে দাঁড়াবে, কোন পথে আগাতে হবে, কারা পথ দেখাবে, কারা নেতৃত্ব দেবে – তারা জানে না।
২০১৩ সালের ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যর্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অবসান ঘটে। আর ২০২১ সালে এসে বাংলায় সেক্যুলার রাষ্ট্র প্রকল্পও ব্যার্থতার পর্যবসিত হয়েছে। মিডিয়া, সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদ আর অভিজাত রাজনৈতিক শ্রেনীর সেক্যুলার বাংলাদেশী রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন জনগণকে দেখানো হয়েছিল তা ছিল এক ধোঁকা। এ কথা আজ স্পষ্ট। দূরদর্শীদের কাছে বাস্তবতা অনেক আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এখন সকলেই তা বুঝতে পারছে। ৫০ বছর পরও বাংলাদেশের জনগণের জান-মাল, ইযযতের নিশ্চয়তা আসেনি। বরং পাকিস্তানী মুরতাদ বাহিনীর আগ্রাসনের পরিবর্তে আজ মিলেছে ভারতীয় মুশরিক এবং তাদের গোলাম আওয়ামী মুরতাদদের আগ্রাসন।
গতানুগতিক দ্বিদলীয় রাজনীতি কিংবা গণতান্ত্রিক রাজনীতি অস্তিত্বহীন এবং অর্থহীন সাব্যস্ত হয়েছে। আগামীতে এ ভুখন্ডের গতিপথ আওয়ামী-বিএনপি দ্বন্দ্বের উপর নির্ভর করবে না। গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ কিংবা অন্য কোন তন্ত্রেরমন্ত্রের উপর নির্ভর করবে না। বরং আজকের এবং আগামীর দ্বন্দ্ব হল শিরক বনাম তাওহীদের দ্বন্দ্ব। কুফরি শাসন বনাম ইসলামী শরীয়াহর দ্বন্দ্ব। মুশরিক-মুরতাদ বনাম মুসলিমদের দ্বন্দ্ব। এ ভূখণ্ডের মুসলিমদের এবং খাসভাবে এ ভূখণ্ডের এ বাস্তবতা অনুধাবন করতে হবে। অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ হবে না।
হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন মোকাবেলা করতে হলে, বাংলাদেশের ইসলামী সংগঠন ও প্লাটফর্মগুলোকে প্রথমে গতানুগতিক গণতান্ত্রিক পথ, অভ্যন্তরীন গ্রুপিং, ওয়াজ মাহফিলে অতিরঞ্জিত বাগাড়ম্বর, এবং দ্ব্যার্থক কথার পথ ছেড়ে এসে, হককে পরিস্কারভাবে ঘোষণা করতে হবে। পরিপূর্ণ তাওহীদ ও আলওয়ালা ওয়ালবারা-র আকিদাহকে দাওয়াহর কেন্দ্র বানাতে হবে। জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতাসহ সব তন্ত্রমন্ত্রের গোলকধাধাঁ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য গ্রহণ করতে হবে জনমুখী কর্মসূচী। যারা সেক্যুলার অতীত ছেড়ে দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করছেন সেই সব শিক্ষিত তরুণদের ইসলামী জাগরণে কাজে লাগাতে হবে। দাওয়াহকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। ইসলামী শরীয়তের পরিপূর্ণ কর্তৃত্বের মূলনীতি এবং মানবরচিত সংবিধান ও আইনের উপরে শরীয়তের শ্রেষ্ঠত্বকে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে। হঠকারী এবং অস্থির কর্মকান্ড এবং সিদ্ধান্ত থেকে দূরে থাকতে হবে। শত্রুর চতুরতাকে মোকাবেলা করতে হবে বিচক্ষণতার সাথে। সমাজের মুনকারের বিরুদ্ধে জনগণকে সম্পৃক্ত ইমানী জাগরণ ও আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এবং নিজেদের লড়াইগুলো বাছাই করতে হবে হেকমতের সাথে।
সেই সাথে বুঝতে হবে যে ইসলামের বিজয় আসে তাওহীদ ও হাদিদের মাধ্যমে। পথপ্রদর্শনকারী কিতাব এবং সাহায্যকারী তলোয়ারের মাধ্যমে। জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর মাধ্যমেই যমিনে তামকীন অর্জিত হয়। আর তামকিন অর্জিত হলেই দ্বীনের প্রতিষ্ঠা এবং মুনকার সত্যিকার অর্থে দমন করা যায়। একইসাথে বাংলাদেশের মুসলিমদের এটিও বুঝতে হবে যে, বাংলাদেশের মুসলিমদের মুক্তি এবং এ ভূখণ্ডে ইসলামের প্রতিষ্ঠা ভারতের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। হিন্দুত্ববাদী শক্তি যতোদিন প্রবল থাকবে, ততোদিন বাংলাদেশের মুসলিমদের মুক্তি আসবে না। মুজিব গেলে হাসিনা আসবে। হাসিনা গেলে অন্য কেউ। চেহারা পরিবর্তন হবে কিন্তু হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন চালু থাকবে। বাংলায় ইসলামের বিজয় উপমহাদেশের ইসলামের বিজয়ের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। তাই মুক্তি চাইলে, ইজ্জত চাইলে, ইসলামের প্রতিষ্ঠা চাইলে ভারতের হিন্দুত্ববাদী শক্তিকে আগে দুর্বল ও পরাজিত করতে হবে। এই দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যকে সামনে রেখেই, পারিপার্শ্বিকতা বুঝেই বাংলাদেশের মুসলিমদের রণকৌশল গ্রহণ করতে হবে। বাস্তবতাকে অনুধাবনে যদি বিলম্ব হয়, যদি অতীতের ভুলে পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে বর্তমানের চেয়েও চড়া মূল্য আমাদের দিতে হবে।
*************
اپنی دعاؤں میں ہمیں یاد رکھيں
اداره الحکمہ براۓ نشر و اشاعت
القاعدہ برِّ صغیر
আপনাদের দোয়ায়
আল হিকমাহ মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
Al Hikmah Media
Al-Qaidah in the Subcontinent