NoteShare

ইসলাহী দরস বিশুদ্ধ নিয়ত ও জিহাদ

اداره النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media

 

پیش کرتے ہیں
পরিবেশিত
Presents

 

بنگالی ترجمہ
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation

 

عنوان:
শিরোনাম:
Titled:

 

تصحیح نیت اور جہاد

ইসলাহী দরস
বিশুদ্ধ নিয়ত 
ও জিহাদ

Correctional intention and jihad

 

 از مولانا خبیب رحمہ اللہ
মুফতি মুহাম্মাদ ইশতিয়াক আ’যমী 
(মাওলানা খুবাইব) রহিমাহুল্লাহ
By Maulana Khubaib Rahimahullah

 

9699526ed29bf32160f36ee50b8e7634.jpg


ڈون لوڈ كرين
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading


پی ڈی ایف
PDF (304 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৩০৪ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/tPiTL84gC39jfnM


https://archive.org/download/bisuddho-niyot-ojihad-mufti-istiaq-azmi/BisuddhoNiyotOJihad%20-%20MuftiIstiaqAzmi.pdf


https://www.file-upload.com/nr7bzr1779tk


https://www.udrop.com/6gG9/BisuddhoNiyotOJihad_-_MuftiIstiaqAzmi.pdf

 

 

ورڈ
Word (157 KB)
ওয়ার্ড [১৫৭ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/8rTaLEMGJNpM867


https://archive.org/download/bisuddho-niyot-ojihad-mufti-istiaq-azmi/BisuddhoNiyotOJihad%20-%20MuftiIstiaqAzmi.docx


https://www.file-upload.com/xbkkp7kga0qf


https://www.udrop.com/6gGc/BisuddhoNiyotOJihad_-_MuftiIstiaqAzmi.docx

 

 

غلاف
book cover [75 KB]
বুক কভার ডাউনলোড করুন [৭৫ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/dWBfY6nQtqAbMfx


https://justpaste.it/img/bfd8f4d013a97399163bf44a7a407a9c.jpg


https://www.file-upload.com/n6yxip2ymaky


https://justpaste.it/img/1615b25a3ed223fe290c405e7be525d4.jpg

 

 

بينر
Banner [79 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৭৯ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/3exZtecDj7P2aYE


https://justpaste.it/img/9699526ed29bf32160f36ee50b8e7634.jpg


https://www.file-upload.com/bhqak22jhjfm


https://justpaste.it/img/f47f89eeb2b8a948fdfb9af59e44a9a2.jpg

 

************

bfd8f4d013a97399163bf44a7a407a9c.jpg

 

ইসলাহী দরস

বিশুদ্ধ নিয়ত

ও জিহাদ

 

মুফতি মুহাম্মাদ ইশতিয়াক আ’যমী

(মাওলানা খুবাইব) রহিমাহুল্লাহ

 

 

 

 

 

بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ

فمن كانت هجرته إلى الله ورسوله فهجرته إلى الله ورسوله ومن كانت هجرته إلى دنيا يصيبها أو إمرأة يتزوجها فهجرته إلى ما هاجر إليه

‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সস্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সস্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে’। (সহিহ বুখারী-১)

প্রিয় ভাইয়েরা!

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অনুগ্রহ করে আমাদেরকে আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার তাওফিক দিয়েছেন। এই রাস্তায় যেসব বুনিয়াদি বিষয়ে লক্ষ্য রাখা জরুরী তার একটি হচ্ছে; নিয়তের বিশুদ্ধতা।

প্রত্যেক আমলের মধ্যেই নিয়তের বিশুদ্ধতা জরুরী। প্রত্যেক আমল, যা করা হবে, তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্যই করা হবে। আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত অন্য কারো সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকবে না। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টির জন্য আমল করাকে ‘রিয়া’ বলা হয়। আর এটাকে রাসুল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘শিরকে খফি’ বা ‘গোপন শিরক’ বলে অভিহিত করেছেন। সুতরাং আমাদের কোনো আমল যেন রিয়া তথা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে না হয়।

আবু মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বললো: “হে আল্লাহর রাসূল! এক ব্যক্তি সুনাম-সুখ্যাতির জন্য জিহাদ করছে, এক ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য জিহাদ করছে, আর এক ব্যক্তি গণিমতের জন্য জিহাদ করছে। তো কোন ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় আছে”?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেকের ব্যাপারে পৃথক মন্তব্য না করে, একবাক্যে বললেন; “যে ব্যক্তি আল্লাহর কালিমা সুউচ্চ করার জন্য জিহাদ করে সেই আল্লাহর রাস্তায় আছে”।

তাই নিয়ত সহীহ হওয়া এবং নিয়ত খালেস হওয়া জরুরী। যে ব্যক্তি আল্লাহর কালিমা বুলন্দ করার জন্য লড়াই করবে, সে আল্লাহর পথে থাকবে। এছাড়া যে ব্যক্তি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে, সেটা যাই হোক না কেন, সে শয়তানের রাস্তায় আছে, সে তাগুতের পথে আছে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন-

الَّذِينَ آمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ ۖ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا.

“যারা ঈমানদার, তারা লড়াই করে আল্লাহর রাস্তায়। পক্ষান্তরে যারা কাফির, তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে। সুতরাং তোমরা জিহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, নিশ্চয় শয়তানের চক্রান্ত বড়ই দুর্বল।” (সূরা আন-নিসা ৪:৭৬)

আল্লাহ তায়ালা দুটি পথ চিহ্নিত করে দিয়েছেন। একটি হলো ঈমানদারদের পথ, অন্যটি হলো কাফিরদের পথ। ঈমানদারগণ জিহাদ করে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য এবং আল্লাহর কালিমাকে বুলন্দ করার জন্য।

প্রতিটি আমলের ক্ষেত্রেই – ‘নিয়তের বিশুদ্ধতা’ একটি মৌলিক শর্ত। এই কারণে অধিকাংশ মুহাদ্দিসিনে কেরাম এই হাদিসকে কিতাবের শুরুতে এনেছেন এবং ব্যাখ্যাকারীগণ এর উদ্দেশ্য ও কারণ এটাই বলছেন যে, পরবর্তী হাদিসগুলোতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা আসবে, আমলের দিক থেকে যেসব বিষয় রয়েছে এবং আহকামের দিক থেকে যেসব বিষয় রয়েছে; সবগুলোর বুনিয়াদ এই হাদিসের উপর নির্ভরশীল। সবগুলো তখনি কবুল হবে যখন মানুষের নিয়ত বিশুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি নিয়ত শুদ্ধ না হয় তবে মানুষ যত বড় আমলই করুক না কেন, যত ভালো আমলই করুক না কেন - সেটা খড়কুটো হয়ে যাবে। সেটি আল্লাহ তায়ালার দরবারে কবুলিয়্যাত পাবে না।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি একটি হাদিস বলতে গিয়ে তিন তিনবার হুশ হারিয়ে ফেলেছিলেন। আর ঐ প্রসিদ্ধ হাদিসটিতে বলা আছে যে, ‘জাহান্নামে প্রথম যাদেরকে ফেলা হবে তাদের মধ্যে দানশীল, আলেম এবং শহিদও থাকবে’।

এই হাদিস বর্ণনা করতে গিয়ে, তিনি তিনবার বেহুশ হয়ে আবার তিনবার জ্ঞান ফিরে পেয়েছেন। আসলে এটি অনেক কঠিন কথা। আমাদের কাছে এই কথাগুলো যতটা হালকা মনে হয়, যতটা গুরুত্বহীন মনে হয় এবং বারবার শোনার কারণে যতটা সহজ মনে হয়, এটা আসলে ততটা সহজ কথা নয়। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা।

শহিদ ছাড়া অন্য যারা আছে যেমন; আলেম - যিনি তার ইলম অনুযায়ী আমল করেন না, দানশীল যিনি সুনাম-সুখ্যাতির জন্য দান করেন, তাদের জন্য একটা সুযোগ আছে। তাদের দিলে হয়তোবা এক সময় আল্লাহর ভয় তৈরি হবে, আর তারা নিজেদের ইলম অনুযায়ী আমল করা শুরু করবে বা আল্লাহর জন্য দান করা শুরু করবে। কিন্তু শাহাদাত এমন বিষয় যার সুযোগ একবারই পাওয়া যায়। এজন্য শুরুতেই নিজের নিয়ত ও আমলের মুহাসাবা নেয়া খুব জরুরী। কখন শাহাদাতের ঘোষণা চলে আসে আমাদের কারোরই এই বিষয়ে জানা নেই।

আমাদের কত সাথী ও আকাবীর ছিলেন, যারা আমাদের সাথে উঠাবসা করতেন, অথচ আজ তারা আমাদের মাঝে নেই। তো কখন শাহাদাতের ঘোষণা আসবে তা মানুষের জানা নেই। তাই এর আগেই নিজের আমলের মুহাসাবা ও নিজের নিয়তের মুহাসাবা করা জরুরী।

যদি আমরা নিয়তের মুহাসাবা না করি এবং আল্লাহ না করুন যদি নিয়তের মধ্যে নূন্যতম সমস্যা থেকে যায় বা সামান্য পরিমাণও বিচ্যুতি চলে আসে - তাহলে এসব যা করা হচ্ছে, এই সমস্ত কুরবানী যা করা হচ্ছে, সব বিনষ্ট হয়ে যাবে।

আমাদের উস্তাদগণ (আল্লাহ তাদের ইলম ও আমলে বরকত দান করুন) এই হাদিস পড়ানোর পূর্বে ছাত্রদের সামনে এটা বলতেন যে, আগের দিনের ছাত্রদের তুলনায়, বর্তমান তালেবুল ইলমদের নিয়তকে বিশুদ্ধ করা আল্লাহ তায়ালা সহজ করে দিয়েছেন। কেননা পিছনের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় যে, সে সময়ে কাজির আদালত কায়েম হলে, তা আলিমদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। শুধু কাজি নয় বরং উপর থেকে নিচে সকল আদালত সেটা সুপ্রীম কোর্ট হোক বা জজ কোর্ট যাই হোক না কেন – আলিমদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো।

অর্থাৎ উপর থেকে নিচে দুনিয়াবি যত বিষয় ছিলো সবগুলো বিষয় আলেম, ফকিহ ও মুফতিয়ানে কেরামের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। যে যত বড় আলেম হতো, যার দ্বীনি ইলম যত বেশি হতো, তিনি তত বড় পদ পেতেন।

তো ঐ সময়ে যিনি ইলম হাসিল করতেন, এই সম্ভাবনা বেশি ছিলো যে নিয়তের মাঝে এই কথা চলে আসবে যে, আমি এই জন্য পড়ালেখা করছি যাতে আমি অমুক এলাকার কাজি হতে পারি। অথবা এজন্য ইলম অর্জন করছি, যাতে আমি অমুক এলাকার দায়িত্বশীল হতে পারি।

এখনতো অবস্থা এই যে, এরকম কোন বিষয়ের কোনো চিন্তা মাথায় আসে না। বরং খুব সাধারণ বেতন ও সাধারণ জীবন যাপন করতে হয়। তো এই কারণেই উস্তাদগণ বলতেন যে, বর্তমানে তালিবুল ইলমদের জন্য নিজেদের নিয়তকে বিশুদ্ধ করা যত সহজ, পূর্বে ততটা সহজ ছিলনা।

তথাপি বর্তমানেও যদি কেউ নিজের নিয়তকে বিশুদ্ধ না করে এবং ১২ কিংবা ১৫ হাজার অথবা এর চেয়েও বেশি টাকার জন্য নিজের নিয়্যতকে নষ্ট করে, তাহলে তারমতো হতভাগা আর কেউ নেই।

বর্তমানে হুবহু একই অবস্থা আমাদের মুজাহিদ ভাইদের। পূর্বে যারা ছিলো এবং যারা চলে গিয়েছে; তাদের বেলায় অমুক কর্তৃত্ব, মালে গনিতের অংশ এবং দাস-দাসী পাওয়া যাবে, এটা মিলবে, ওটা মিলবে - এই ধরণের সম্ভাবনা ছিল। এতে নিয়তের মাঝে দুর্বলতা তৈরির সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু বর্তমানে এ সকল বিষয় থেকে আমরা মুক্ত। শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার কালিমাকে বুলন্দ করার জন্য এবং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য এই লড়াই করছি।

তবে এখানেও নিয়তের উপর শয়তান এভাবে হামলা করতে পারে যে - আমাকে জিম্মাদার বানিয়ে দেয়া হবে অথবা আমার কথা শোনা হবে। যদি জিম্মাদার না বানানোও হয়, তবে কমপক্ষে আমার একটি অবস্থান তো সৃষ্টি হবে! আমি যা বলবো সে কাজ করা হবে।

এটা আসলে খুবই নগণ্য একটি বিষয়। মানুষ যদি আকল খাঁটায় তাহলে বুঝতে পারবে - শাহাদাতের পর দুনিয়া থেকে চলে গিয়ে যা পাবে, তার তুলনায় এটি খুবই নগন্য। এর বিপরীতে পূর্বের ভাইদের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সে সময়ে যেসব বিষয়ের আশা রাখার সুযোগ ছিল, সেগুলো যদিও আখেরাতের তুলনায় নগন্য - তারপরও সেগুলোর তুলনায় এখনকার দুনিয়াবি চাওয়া পাওয়াগুলো আরো নগন্য। আখেরাতের সাথে তো এগুলোর কোন তুলনাই চলে না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,

وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ

‘…দুনিয়ার জীবন তো ধোঁকার উপকরণ মাত্র’। (সূরা আল-হাদিদ ৫৭:২০)

আল্লাহ তায়ালা তো তাঁর রাসূলকে ঐসব ব্যক্তির কথা মানতে বারণ করেছেন, যাদের অন্তর আল্লাহর স্বরণ থেকে গাফিল। এমনকি তাদের দিকে চোখ তুলেও তাকাতে নিষেধ করেছেন।

অর্থাৎ দুনিয়ার দিকে তাকানো তো দূরের কথা, যেসব লোক দুনিয়ার আকাঙ্খা রাখে তাদের প্রতি চোখ তুলে তাকানোর অনুমতি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেওয়া হয় নি।

কারূনের ধন-সম্পদ ও সুবিধাসমূহ দেখে কিছু মানুষ বলেছিল, কারুন তো অনেক বড় সম্পদশালী হয়ে গেলো। সে তো অনেক উচুস্তরে পৌঁছে গেলো। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা কারুনের দাম্ভিকতা সম্পর্কে বলেন,

قَالَ إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَىٰ عِلْمٍ عِندِي . أَوَلَمْ يَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ قَدْ أَهْلَكَ مِن قَبْلِهِ مِنَ الْقُرُونِ مَنْ هُوَ أَشَدُّ مِنْهُ قُوَّةً وَأَكْثَرُ جَمْعًا . وَلَا يُسْأَلُ عَن ذُنُوبِهِمُ الْمُجْرِمُونَ

“সে বলল, আমি এই ধন আমার নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছি। সে কি জানে না যে, আল্লাহ তার পূর্বে অনেক সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছেন, যারা শক্তিতে ছিল তার চাইতে প্রবল এবং ধন-সম্পদে অধিক প্রাচুর্যশীল? পাপীদেরকে তাদের পাপকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে না।” (সূরা কাসাস ২৮:৭৮)

তো যাদের কাছে কিতাবের ইলম ছিল, আল্লাহ তায়ালার দেয়া ইলম যাদের কাছে ছিল, তারা বলেছে যে, এটাতো অহংকার করার মতো কোনো বিষয় নয়। বরং আল্লাহ তায়ালা তো ইতিপূর্বে এর চেয়ে বড় সম্পদশালী, বড় শক্তিশালীকেও ধ্বংস করে দিয়েছেন।

তো পূর্বের যুগে, কর্তৃত্ব বা ধন-সম্পদের আশা-আকাঙ্খা ছিল। যদিও সেটা বেশ বড় কিছু, কিন্তু আখিরাতের বিপরীতে তা’ও বিশেষ দৃষ্টি পাওয়ার মতো কিছু ছিলনা। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দুনিয়াবি যা কিছু মিলে, তাকে যদি আমরা আখিরাতের সাথে তুলনা করি, তবে তা খুবই তুচ্ছ। সুতরাং বড়ই দুর্ভাগা ঐ ব্যক্তি, যে দুনিয়ার তুচ্ছ কোন বস্তুর জন্য নিজের নিয়তকে নষ্ট করে। অর্থাৎ যে বস্তুর দুনিয়াতেই কোন মুল্য নেই, তার জন্য নিজের নিয়্যতকে নষ্ট করে।

এই জন্য হে দোস্ত! আমাদের মধ্যে কেউ ছোট হোক বা বড় হোক, কখনো শয়তান থেকে অসতর্ক থাকা উচিৎ নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে দোয়া শিখিয়েছেন সেই দোয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়া দরকার। এই দোয়াকে সবসময় অন্তরে গেঁথে রাখা প্রয়োজন।

اللهم اصلح لنا شأننا كله ولا تكلنا إلى أنفسنا طرفة عين

‘হে আল্লাহ! আমাদের সকল অবস্থাকে আপনি সংশোধন করে দিন এবং আমাদেরকে চোখের পলক পরিমাণ সময়ের জন্যও আমাদের নিজেদের উপর ছেড়ে দিয়েন না’। (সহিহ আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব ১/২৭৩)

সুতরাং, আমরা যেন এই চিন্তায় নির্ভয় হয়ে না যাই যে, আমরা তো আল্লাহ রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছি, আমরা তো দুনিয়াকে পেছনে রেখে এসেছি। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় অনুগ্রহ, অনেক বড় শুকরিয়া যে আমরা দুনিয়াকে বর্জন করেছি। কিন্তু এই দুনিয়া কোনো না কোনোভাবে - সেটা জানের মুহাব্বাতের সুরতে, দুনিয়ার মুহাব্বাতের সুরতে অথবা সম্পদের মুহাব্বাতের সুরতে, রিয়ার সুরতে, শিরকে খফির সুরতে - আমাদের অন্তরে জায়গা করে নিতে পারে। শয়তান আমাদের পেছনে ঐ সময় পর্যন্ত লেগে আছে যতক্ষণ না, আমাদের প্রাণ আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বড়ই নির্বোধ ঐ ব্যক্তি, যে মনে করে  -‘আমি শয়তানের ধোঁকা থেকে নিরাপদ হয়ে গেছি’।

প্রকৃতপক্ষে আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদ নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত এই প্রাণ হলকে আটকে থাকে এবং এই প্রাণ জীবিত থাকে। এই জন্য সর্বদা সতর্ক থাকবে হবে এবং সর্বদা নিজের নিয়তের মুহাসাবা করতে হবে।

সাধারণত সময়ের সাথে নিয়তের মাঝে দুর্বলতা আসে। আর এই দুর্বলতা আসাটা কোন অপরাধ নয়। কিন্তু এই প্রলোভনকে নিজের আকল ও অন্তকরণে স্থায়ী করে নেয়া এবং এই বাজে নিয়তের উপর অবিচল থাকা - আল্লাহর নিকট অপরাধ এবং এর উপর তাওবা ইস্তেগফার না করাও অপরাধ।

এজন্য নিয়তকে বিশুদ্ধ করা অনেক জরুরী। নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে - আমি যে এই কাজটি করছি, তা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির করছি, নাকি অন্য কোনো দুনিয়াবি খেতাব বা পদবি পাওয়ার জন্য করছি?

এভাবে যদি আমরা আমাদের নিয়তকে পরিশুদ্ধ রাখি তাহলে তার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য কী কী নেয়ামত তৈরি করে রেখেছেন?

এমন নেয়ামত যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শুনেনি এবং কোন মানুষের অন্তরে কল্পনায়ও আসেনি। আল্লাহ তায়ালা এমন সব নিয়ামত প্রস্তুত করে রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّا أُخْفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ

“কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্যে কী কী নয়নপ্রীতিকর প্রতিদান লুক্কায়িত আছে। (সূরা আস-সাজদা 3২:১৭)

যদি এই মুহাসাবা আমাদের সামনে থাকে, এই দৃশ্যগুলো সর্বদা আমাদের সামনে থাকে, তাহলে ইনশাআল্লাহ তা আমাদের নিয়তকে পরিশুদ্ধ করার জন্য অনেক উপকারী হবে।

তো এটা খুবই জরুরী - প্রথমত আমার জন্য, পরে সবার জন্যই জরুরী। কেননা আমরা এমন এক পথে আছি যেখানে দ্বিতীয়বার সুযোগ পাওয়া যায় না। এমন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে, যে দ্বিতীয়বার সুযোগ পায়। সাধারণত দ্বিতীয়বার কেউ সুযোগ পায় না। প্রথমতো শাহাদাত এবং এর পরেই ফায়সালা। শাহাদাতের পরে যে ফায়সালা হবে এবং আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের যেসব নেয়ামত ও অনুগ্রহ পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করে নিয়তের বিশুদ্ধতার উপর।

আজ একটা হাদিস পড়া হয়েছে যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় রিবাত করবে (রাত জেগে পাহারা দিবে) সে ষাট বছর তার ঘরে ইবাদাত করার চেয়েও উত্তম সাওয়াব পাবে। অন্য হাদিসে এসেছে, একশত বছর ইবাদাতের চেয়ে উত্তম। সুবহানাল্লাহ! এই সকল ফাজায়িল তখন হাসিল হবে, যখন নিয়্যত বিশুদ্ধ হবে।

মূলত আমলের ফলাফল নির্ভর করে নিয়তের উপর। আমাদের নিয়তকে এভাবে শুদ্ধ করে নেই যে, আমরা এখানে জমায়েত হয়েছি শুধুমাত্র আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য এবং আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। যদি আমরা প্লেট ধোয়ার কাজ করি, তবে তা যেন এই উদ্দেশ্যেই করি। যদি আমরা থাকার জায়গা পরিস্কার করি, সেটাও যেন এই উদ্দেশ্যেই করি। যেভাবে অযু ও নামায একমাত্র খালেস আল্লাহর জন্য করি, সেভাবে জিহাদের সকল কাজও একমাত্র আল্লাহর জন্য করব।

যে ব্যক্তি জিহাদে উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায় – সে যেন তার ঘুমানো, জাগ্রত হওয়া, উঠা-বসা এ সবকিছু কাউকে দেখানোর জন্য বা কাউকে খুশি করার জন্য না করে। বরং শুধুমাত্র আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতকে সন্তুষ্ট করার জন্য করে। তখন আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। হাদিসে এসেছে; আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত ফিরিশতাদের মাঝে ঘোষণা দেন যে, আমি অমুক বান্দার উপর সন্তুষ্ট হয়ে গেছি তোমরাও সন্তুষ্ট হয়ে যাও। আর ফিরিশতাগণকে জমিনে ঘোষণা করে দিতে বলেন যে, আল্লাহ তার উপর রাজি সুতরাং তোমরাও তার উপর রাজি হয়ে যাও।

অন্তরের মালিক হচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা। তিনি যেদিকেই চান তাকে পরিবর্তন করে দেন। হাদিস শরীফে এসেছে; অন্তরের উদাহরণ হলো একটি শূন্য ময়দানের মতো যেখানে একটি ডিম ঘুরপাক খেতেই থাকে। এজন্যই আমাদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই দোয়ার ইহতেমাম করা দরকার-

اللهم يا مقلب القلوب ثبت قلوبنا على دينك

“হে আল্লাহ! আপনি আমাদের অন্তরকে আপনার দ্বীনের উপর দৃঢ় করে দেন, যেন কোন ধরণের বিচ্যুতি না আসে। হে আল্লাহ! আমাদের অন্তর আপনার আনুগত্যের উপর দৃঢ় করুন”

يامصرف القلوب صرف قلبي إلى طاعتك

“হে আল্লাহ! আপনার আনুগত্যের উপর আমাদের অন্তরকে স্থির করে দিন। ”

যখন আল্লাহ তায়ালা কারো অন্তরকে তার আনুগত্যের উপর স্থির করে দেন, তখন গোটা দুনিয়ার মানুষের দৃষ্টি তার দিকে ফিরে যায় এবং সত্য ও সঠিক স্বভাবের লোকেরা তাকে মুহাব্বাত করতে থাকে। এই বাস্তবতা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি।

শাইখ উসামা বিন লাদেনের অবস্থা দেখুন। পূর্বে লাখো মানুষ বিরোধিতা করছে - ভয়ে, আতঙ্কে বা দুনিয়ার মুহাব্বতে, দুনিয়ার চাকচিক্যের আশায় অথবা অন্যকোন কারণে। কিন্তু এতো কিছুর পরও যখন শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহর শাহাদাত হলো; তখন প্রত্যেক মুসলমান এবং সৎ স্বভাবের অধিকারী ব্যক্তিই অন্তরে ব্যথা এবং দুঃখ অনুভব করেছে। প্রত্যেক মুসলমানের দিলে ব্যথা অনুভব হওয়া এ কথার আলামত যে - আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করে দিয়েছেন যে; দেখো আমি এই ব্যক্তির উপর সন্তুষ্ট হয়েছি, তোমরাও তার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যাও। আর যে আল্লাহকে অসন্তুষ্ট রাখে, চাই দুনিয়ার বহুত ভালো কাজই করুক - তার প্রতি দুনিয়ার মানুষও অসন্তুষ্ট থাকে। দুনিয়াতে এর উদাহরণ অনেক।

তো দোস্ত! এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ যে, আমরা আমাদের নিয়তের হিসাব নিব। শুধু একবার নয় বরং সকাল-সন্ধ্যা, আসতে যেতে, নিজের প্রত্যেক কাজেই নিয়তের হিসাব নিব। যেন আমরা খাটি অন্তর নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারি।

হাদিসের মধ্যে এসেছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মুজাহিদ যিনি শহিদ হন অথবা রিবাতে অবস্থানকারী হোক, যদি তিনি দুশমনের আঘাত ছাড়াই রিবাতে মৃত্যু বরণ করেন - তবে আল্লাহর সাথে এমনভাবে সাক্ষাত হবে, যেন আজই তিনি মায়ের পেট থেকে জন্ম গ্রহণ করেছেন’।

তো এসব মর্যাদা অর্জন হবে, যখন আমরা আমাদের নিয়তকে খালেস করব এবং সকাল-সন্ধ্যার প্রত্যেকটা কাজেই নিয়তকে যাচাই-বাছাই করবো। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে নিয়ত খালেস করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সমস্ত আমলকে বিশুদ্ধ করে দিন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সমস্ত আমলকে তাঁর সন্তুষ্টির জন্যই করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

 

**********

اپنی دعاؤں میں ہمیں یاد رکھيں
اداره النصر براۓ نشر و اشاعت
القاعدہ برِّ صغیر
আপনাদের দোয়ায়
আন নাসর মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent