কায়িদাতুল জিহাদ - কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
أَلا إِنَّ نَصْرَ اللّهِ قَرِيبٌ
"শুনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে"
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আপন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন। আপন বান্দাদেরকে সাহায্য করেছেন এবং একাই জায়নবাদী গোষ্ঠীকে পরাজিত করেছেন।
রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক লড়াই ও সংগ্রামকারীদের সরদার এবং সৌভাগ্যশালীদের নেতা সাইয়েদুনা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর, তাঁর পরিবার ও পরিজনের উপর এবং তাঁর সকল সাহাবী রাযিয়াল্লাহু আনহুর উপর..
প্রশংসা ও সালাতের পর...
আমরা আল্লাহর প্রশংসায় বলতে চাই:
الله أكبر كبيرا والحمد لله كثيرا وسبحان الله بكرة وأصيلا
বর্তমান সময়ে আশা করি আল্লাহর সবচেয়ে উত্তম ও মর্যাদাপূর্ণ দিনগুলোর একটিতে আমরা কথা বলছি। এই দিনগুলো খাইবার ও বনী কুরাইজার দিনের মতো। এই দিনগুলো ইজ্জত, সম্মান, বিজয়, মনোবল, সাহসিকতা ও গৌরবের। কারণ আমরা দেখতে পেয়েছি ক্রুসেডার ও জায়নবাদীদের সুরক্ষিত কেল্লা ঈমানদীপ্ত মুহাম্মদী বাহিনীর সামনে কিভাবে ধসে পড়েছে। মুসলিমদের অস্ত্রের সামনে কাফেরদের সারি উলটপালট হয়ে পড়েছে। সীমালঙ্ঘনকারী ইহুদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সাহাবীদের উত্তরসূরিরা জেগে উঠেছেন। তারা নিজেদের পবিত্র উজ্জ্বল হাত দ্বারা এবং গৌরবময় সাহসী অন্তর দিয়ে মাহাত্ম্য ও গৌরবের উদাহরণ রচনা করেছেন।
এখন লেখক সাহিত্যিকদের একথা স্বীকার করে নেয়ার সময় এসেছে যে, ঈমানী এই গৌরব তুলে ধরতে তাদের কলম অক্ষম। ফিলিস্তিনের বরকতময় যুদ্ধের নৈপুণ্য বর্ণনা করতে তাদের লেখনী ব্যর্থ। ফিলিস্তিনের মুজাহিদীন কাফেলা এই রণাঙ্গন রচনা করেছেন। ইসলামের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে ‘তুফানুল আকসা’ অন্যতম রণাঙ্গন। যুগান্তকারী এই যুদ্ধের পরিকল্পনা, নৈপুণ্য, কর্মক্ষেত্রে নিজেকে বিলীন করে দেয়ার আকাঙ্ক্ষা, নিষ্ঠা, বীর বাহাদুরদের কর্মদক্ষতা, রণকৌশল এবং অভিযান পরিচালনাকারীদের চতুর্মুখী বুদ্ধিমত্তা ও চতুরতা - এই যুদ্ধকে এমন এক পর্যায়ে উন্নীত করেছে, যা কল্পনাকেও হার মানায়।
নিরাপত্তা, সামরিক অবস্থা, গোয়েন্দা নীতি, স্ট্র্যাটেজি— সব ক্ষেত্রেই এই অভিযান ছিল কল্পনাতীত সাফল্যের অধিকারী। যখন থেকে বানর শূকরের বংশধর ইহুদীরা আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সফরের মানযিল দখলে নিয়েছে, তখন থেকেই আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলাম, ইসলামের বীর বাহাদুরদের পক্ষ থেকে পরিচালিত আগামী দিনের তুফান জায়নবাদী ও ক্রুসেডারদেরকে সেপ্টেম্বরের ভয়াবহতার কথা ভুলিয়ে দেবে। আগামী দিনের অভিযানগুলো এমন সাফল্য অর্জন করবে, যার সামনে বিগত দিনের অভিযানগুলো নিছক আনুষ্ঠানিকতা বলে মনে হবে।
আলহামদুলিল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে ঐশী সাহায্যপ্রাপ্ত এবং আসমানি রহমত ধারায় সিক্ত এই বিজয়ের মাধ্যমে ঈমান নবায়নের দৃশ্য অবলোকন করিয়েছেন। মহান আল্লাহর কাছে আমরা দোয়া করি, তিনি যেন গাজা উপত্যকায় আমাদের সাহসী প্রিয় ভাইদেরকে অটল অবিচল রাখেন। তাদের মধ্যে বারাকাহ দান করেন। আল্লাহ আমাদের ভাইদেরকে গোটা ফিলিস্তিনে কল্যাণ সাধন, বিজয় ও দীন প্রতিষ্ঠার তাওফীক দান করুন। আল্লাহ তাদের এই সাহসী অভিযান কবুল করে নিন। তাদের এই অভিযান বর্তমান সময়ে ইসলামের বীর বাহাদুরদের সাহসিকতা ও বীরত্বের সর্বোচ্চ প্রতীক। মহান রব আমাদের ভাইদের শহীদানকে কবুল করুন। তাদের আহতদেরকে আরোগ্য দান করুন। বন্দী ভাইদেরকে এবং পবিত্র ভূখণ্ডকে স্বাধীনতা ও মুক্তি দান করুন। আল্লাহ সম্মান ও গৌরবের গাজা উপত্যকায় আমাদের ভাই-বোনদের রক্ত হেফাযত করুন এবং শত্রুদের বোমা ও আগুন-বৃষ্টিকে তাদের ওপর শীতল ও প্রশান্তিদায়ক করে দিন। আমীন।
ভাই হিসেবে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের দায়িত্ব এই যে, ফিলিস্তিনের অশ্বারোহীদের এই সুউচ্চ সমর-দক্ষতা, রণকৌশল, যুদ্ধ ক্ষেত্রে বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ চতুরতা, সাবধানতা ইত্যাদি সবকিছুর প্রাণশক্তি দ্বারা আমরা আরও সুসংহত হব। আমরা তাদের থেকে শিক্ষা লাভ করবো। একইভাবে তাদের উত্তম ধৈর্য, অবিচলতা, কষ্ট সহিষ্ণুতা এবং আল্লাহর উপর ভরসার গুণ দ্বারা সুশোভিত হব। কারণ তারা গোটা বিশ্ববাসীর সামনে ইসরাইল, পশ্চিমা বিশ্ব এবং তাদের তাবেদার আরব বিশ্বের শক্তি-সক্ষমতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিয়েছে। পশ্চিমা প্রযুক্তি, টেকনোলজি ইত্যাদির অসারতা সকলের সামনে তুলে ধরেছে। আমরা ফিলিস্তিনি ভাইদেরকে একটা কথাই বলবো: কায়েদাতুল জিহাদে আপনাদের ভাইয়েরা এবং সারা বিশ্বের সত্যপন্থি একনিষ্ঠ মুজাহিদীন আপনাদের সাথে একই কাতারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা আপনাদেরকে সমন্বিত প্রয়াস এবং জনসংযোগ মূলক কর্মপন্থার আহ্বান জানাচ্ছি। শত্রুপক্ষ যেন আপনাদেরকে জনবিচ্ছিন্ন পেয়ে আপনাদের এক একটি কাফেলাকে ধ্বংস করতে না পারে। আমরা আপনাদের সঙ্গে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আল্লাহকে সাক্ষী বানিয়ে বলতে চাই, কিছুতেই আমরা আপনাদেরকে একা ছেড়ে যাবো না— যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের শরীরে এক ফোঁটা রক্ত অবশিষ্ট থাকবে। এই পথে হয় আমরা বিজয় অর্জন করবো অথবা সেই পেয়ালার স্বাদ আস্বাদন করবো, যা হযরত হামজা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব রাযিয়াল্লাহু আনহু আস্বাদন করেছিলেন:
دمائكم جسر إلى النصر أحمر
আপনাদের রক্ত বিজয়ের পথে রক্তিম সেতু
وبوابة منها إلى الخلد يعبر
এই সেতু অতিক্রম করলেই রয়েছে স্থায়িত্বের উন্মুক্ত ফটক
دمائكم إعصار عزم وهمة
ونار على أعدائنا تتسعر
আপনাদের রক্ত প্রত্যয় ও দৃঢ়সংকল্পের বৃক্ষে পানির সিঞ্চন এবং শত্রু বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রজ্বলিত অগ্নি
بها النفس من أوهامها قد تحررت
আপনাদের রক্তে সকল দ্বিধা সংশয় থেকে মুক্তি পেয়েছে উম্মাহর মন
وسوف بها الأقصى غدا يتحرر
আগামী দিনে আপনাদের রক্তে স্বাধীন হবে আল-আকসা প্রাঙ্গন
হে মুসলিম উম্মাহ!
গোটা বিশ্ববাসীর সামনে আল্লাহর অন্যতম প্রমাণ ও নিদর্শন হল: তিনি এই যুগে বৈশ্বিক পরাশক্তির— যার শীর্ষে রয়েছে আমেরিকা এবং তার লালিত পালিত ইসরাইল— প্রযুক্তি ও সক্ষমতার অসারতা দেখিয়ে দিয়েছেন। বিগত বছরে মুসলিম বিশ্বে এই কাফের রাষ্ট্রগুলো এবং ক্রুসেডার শক্তিগুলো যেই পরাজয় বরণ করেছে, তার দাবি ছিল এই যে, অচিরেই আমরা এই গৌরবের দিন প্রত্যক্ষ করবো। ইসরাইল এবং তার মিত্রদের স্ট্র্যাটেজি, সামরিক, নিরাপত্তাগত ও আর্থিক সর্বমুখী ব্যর্থতা অবলোকন করবো।
‘তুফানুল আকসা’ যুদ্ধ থেমে যাবার পর গোটা বিশ্ব অচিরেই এই বরকতময় যুদ্ধের এমন ফলাফল দেখতে পাবে, যা জায়নবাদীদের সামাজিক ও সামষ্টিক কাঠামোতে বড় মাপের ক্ষতি সাধন করবে। এই অভিযান সকল অঙ্গনে ইসরাইল এবং তার মিত্রবাহিনীর জন্য বিপর্যয় বলে প্রমাণিত হবে। বৈশ্বিক জিহাদী অঙ্গনে এই বিরাট পরিবর্তন, লড়াইয়ের ঘাঁটিগুলোতে এই তৃণমূল বিবর্তন এবং শতাব্দীকালের এই সুযোগ— যা গোটা জীবনে কখনও এক দুইবারের বেশি আসে না—এই সবকিছুকে সামনে রেখে আমরা গোটা বিশ্বের মুসলিম জনসাধারণকে আহ্বান করতে চাই, তারা যেন এই যুদ্ধে অবতীর্ণ হন, যা ফিলিস্তিন ভূখণ্ড স্বাধীন করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী পদক্ষেপ বলে গণ্য। আমরা তাদেরকে সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে জিহাদে অংশগ্রহণের দাওয়াত দিচ্ছি। এই ইসলামিক তুফানের প্রশ্নে ইতিবাচকতা অবলম্বনের এবং যে কোনো পশ্চিমা ও ইহুদী বিষয়ের প্রশ্নে নীতিবাচক পন্থা অবলম্বনের জন্য উৎসাহিত করছি।
একইভাবে সম্মানিত মুসলিম উম্মাহকে আমরা দাওয়াত দিচ্ছি - বস্তুগত ও মানসিক সমর্থন নিয়ে ফিলিস্তিনে আমাদের ভাই ও বাহাদুরদের পাশে দাঁড়াবার। গোটা উম্মাহকে আমরা উদ্বুদ্ধ করছি, তারা যেন ক্রুসেডার জায়নবাদী ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে উন্মুক্ত যুদ্ধক্ষেত্রে অবতরণ করেন। সর্বত্র তাদের স্বার্থকে আঘাত করেন। বরকতময় অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় যে কোনো বিপদ-আপদ ফিলিস্তিনি ভাইদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন। কুরআনের ইরশাদ:
انْفِرُواْ خِفَافًا وَثِقَالاً وَجَاهِدُواْ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
অর্থঃ “তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প অথবা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে, এটি তোমাদের জন্যে অতি উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পারো।" (সূরা তাওবা ০৯:৪১)
গাজাবাসীকে একা ছেড়ে দেয়া গোটা মুসলিম বিশ্বের জন্য বিরূপ পরিণতি বয়ে আনবে। তাই ফিলিস্তিন ঘিরে যে সমস্ত দেশ রয়েছে, সেগুলোর অধিবাসীদেরকে বিশেষভাবে আমরা দাওয়াত দিচ্ছি: তারা যেন সীমান্তের বেড়া ভেঙে ফেলেন এবং ফিলিস্তিনের ভাইদের সঙ্গে গিয়ে মিলিত হন। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সফর-ভূমিতে অবস্থানকারী জিহাদী নেতৃবৃন্দ আপনাদেরকে আহ্বান করছেন, তাদের সঙ্গে শরীক হবার। তাই আপনারা তাদের ডাকে সাড়া দিন।
গৌরব মর্যাদার অধিকারী সিনাই অঞ্চলের গোত্রগুলোকে বলবো, আপনারা গাজা সীমান্তের অভিমুখী হন। আমাদের ভাই-বোনদের উপর আরোপিত অবরোধ ভেঙে ফেলুন। জনবল, অর্থবল, খাদ্যদ্রব্য, অস্ত্রশস্ত্র- যা কিছু তাদের প্রয়োজন, সবকিছু আপনারা সরবরাহ করতে চেষ্টা করুন।
জর্ডানের অধিবাসী বিশেষ করে সেখানকার আত্মমর্যাদাশীল সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদেরকে বলবো: আপনাদের সন্তান ও ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে কে দাঁড়াবে? আল-আকসা স্বাধীন করার লড়াইয়ে অংশগ্রহণের জন্য জিহাদের ভূমিতে কারা গমন করবে?
একইভাবে রিবাতের ভূমি শামের অধিবাসীদের উচিত, গোলান ফ্রন্টে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জাহান্নামের দরজা খুলে দেয়া।
লেবাননের অস্ত্র বহন করতে পারা প্রত্যেককেই আমরা দাওয়াত দিচ্ছি, আপনারা জায়নবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনোযোগী হন। কারণ যুদ্ধের ফ্রন্ট যত বৃদ্ধি পাবে, ততই বরকতময় আল-আকসার স্বাধীনতা ও বিজয় ঘনিয়ে আসবে।
নিশ্চয়ই ‘তুফানুল আকসা’ অভিযান ইসরাইলি বাহিনীকে গাজা ইস্যুতে আটকে দিয়েছে। সেই সঙ্গে আত্মসমর্পণমূলক এবং আগে পরের বিশ্বাসঘাতকতামূলক সমস্ত সন্ধি চুক্তির পথ বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা সেই সমস্ত সন্ধি চুক্তির কথা বলছি, বিশেষভাবে যেগুলোর সুসংবাদ ঘোষণা করে বেড়াতো ইসরাইলের গোলাম ইহুদীবাদী জায়নবাদী সন্তান ইবনে সালমান। তাই মুসলিমদেরকে আহ্বান জানিয়ে বলবো, আপনারা মুজাহিদীনের চেতনা ধারণ করুন। তাদের আলো ও অগ্নিস্ফুলিঙ্গ নিয়ে আরব আমিরাতের দুবাই ও আবুধাবির সড়কগুলোতে জায়নবাদী স্বার্থকে আপনারা আঘাত করুন। একইভাবে ইসলামী মাগরেব অঞ্চলের মরক্কো ও রাবাত, সৌদি আরবের জেদ্দা ও রিয়াদ এবং বাহরাইনের মানামা— সর্বত্র আপনারা ঝাঁপিয়ে পড়ুন।
মুসলিম বিশ্বের যেখানেই মুসলিম সশস্ত্র বাহিনী সাহসিকতা প্রদর্শন করছে, তাদের সকলের প্রতি আমরা সংহতি জানাই। তারা মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ার মহানায়কের মতোই নিজেদের অগ্রযাত্রা ও সাফল্য বজায় রেখেছে। এই সমস্ত বাহিনীতে যারা অন্তর্ভুক্ত তাদেরকে আমরা দাওয়াত ও আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন নিজেদের রবের কাছে তাওবা করেন, প্রত্যাবর্তন করেন এবং এ জাতীয় সাহসী কাজের মাধ্যমে নিজেদের পাপ সমূহের প্রায়শ্চিত্ত করেন।
হে ইসলামের সন্তানেরা!
চেয়ে দেখুন, বৈশ্বিক কুফরী শক্তি জায়নবাদীদের পাশে দাঁড়াবার জন্য একে অপরকে আহ্বান জানাচ্ছে। তারা অস্ত্র, জনবল, অর্থবল এবং তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করছে। অথচ আমরা এক উম্মাহ, একই কিবলা অভিমুখে সালাত আদায়কারী। আমাদের কিতাব এক, রাসূল এক। তাই আমাদের উচিত বৈশ্বিক কুফরী শক্তির মোকাবেলায় এক কাতারে সারিবদ্ধ হওয়া। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অলৌকিক সফরের ভূমিতে অবস্থানকারী জিহাদী নেতৃবৃন্দের ডাকে সাড়া দেয়া আমাদের কর্তব্য। ফিলিস্তিনের ভেতরে বাহিরে জিহাদের পরিধি ব্যাপক করা আমাদের দায়িত্ব। তাই আসুন আমরা তাদের ডাকে লাব্বাইক বলি, তাদের বার্তা আপন করে নিই। মহান পরাক্রমশালী আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল ও ভরসা করি। এই অভিযানের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের মুজাহিদীন গোটা উম্মাহর কাছে তাদের সঙ্গে বরকতময় জিহাদে অংশগ্রহণের আহ্বান পৌঁছে দিয়েছেন। তাই ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরে জিহাদ সীমাবদ্ধ এমন যুক্তি দেখিয়ে কারও অপারগতা পেশ করার সুযোগ নেই। সীমা অতিক্রমকারী ইহুদী গোষ্ঠী এবং তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে পৃথিবীর সর্বত্র জলে, স্থলে, আকাশপথে সর্বস্থানে জিহাদ ছড়িয়ে দিতে হবে।
ফযীলাতুশ শায়খ মৌরিতানিয়ার আলেমে দীন মুহাম্মাদ আল-হাসান বিন আল-দেদেউ (দেদু) হাফিযাহুল্লাহ যেই ফাতওয়া দিয়েছেন, আল আকসা চ্যানেল কর্তৃক প্রচারিত সেই ফাতওয়া আঁকড়ে ধরতে আমরা ভুলবো না। তাঁকে যখন ‘তুফানুল আকসা’ যুদ্ধের পরিস্থিতিতে উম্মাহর নানাবিধ যোগ্যতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী উম্মাহর দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়, তখন আল্লাহর তাওফীকে তিনি বলেছেন: “আল আকসা মসজিদ স্বাধীন করার জন্য গোটা উম্মাহর ওপর সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দেয়া ওয়াজিব। সীমান্তপ্রহরী ভাই-বোনদের সাহায্যের জন্য সবকিছু নিয়ে তাদের এগিয়ে আসা উচিত। গাজা উপত্যকায় আমাদের ভাই-বোনদের ওপর আরোপিত অন্যায় অবরোধ ভেঙে দেয়ার জন্য তাদের এগিয়ে আসা উচিত। সর্বস্থানের মজলুম ও নিপীড়িতদের সাহায্যের জন্য গোটা উম্মাহর ওপর ফরয ও ওয়াজিব হলো কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা।”
এই পবিত্র যুদ্ধের ঘোষণার মধ্য দিয়ে এবং ‘তুফানুল আকসা’ অভিযানের মাধ্যমে উম্মাহর যুবকদের সামনে; এমনকি গোটা উম্মাহর সামনে দ্বার উন্মোচিত হয়ে গিয়েছে। সকলেই জেনে গিয়েছে অবারিত সুযোগের কথা। আজকের পর কারও কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়। গোটা উম্মাহর কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে সামর্থ্যের সবটুকু নিয়ে অগ্রসর হওয়া। নিজেদের আকীদা বিশ্বাস, দীন ইসলাম এবং পবিত্র স্থান ও বিষয়গুলোকে সর্বস্ব বিসর্জনের বিনিময়ে এবং জান-মাল, সন্তান-সন্ততি উৎসর্গের মাধ্যমে রক্ষা করা। এই উদ্দেশ্যে সকল উপায়-উপকরণ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। এই দায়িত্ব শাসক-শাসিত, ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ, আরব-অনারব সকলের। এই ফরয দায়িত্ব কেউ অস্বীকার করতে পারে না। কেউ যদি অস্বীকার করে, তবে সে কুফরীতে লিপ্ত। কারণ এই ফরয দায়িত্ব জরুরিয়াতে দীনের অন্তর্ভুক্ত (ইসলামের যে সমস্ত বিষয় অকাট্যভাবে প্রমাণিত এবং সর্বজনবিদিত, এই ফরয দায়িত্ব তেমনই একটি বিষয়)। কারণ ইসলামের অকাট্য, প্রমাণিত, শাশ্বত ও সর্বজনবিদিত কোনো বিষয়ে কেউ যদি অস্বীকার করে, তবে সে কাফের এবং মিল্লাতে ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত।
তাই সারা বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে, যে কোনো ভূখণ্ডে এবং যেকোনো সীমান্তের কাছে অবস্থানকারী হে ইসলামের বীর বাহাদুরগণ!
‘তুফানুল আকসা’ অভিযানে আত্মনিয়োগ করার এখনই সময়। তাই আপনারা ইসরাইলের মিত্রদেরকে আঘাত করুন, যারা সমর্থন দিয়ে, সাহায্য দিয়ে এবং মরণঘাতী অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করে ফিলিস্তিনে আমাদের ভাইদেরকে হত্যার দৃশ্য দেখতে ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়েছে। আপনারা আমাদের মুসলিম দেশগুলোতে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি সমূহ, তাদের বিমানবন্দর ও দূতাবাসগুলোর ভূমি প্রকম্পিত করে তুলুন। কারণ মার্কিন কোষাগার থেকেই মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ইসরাইলের সাহায্যের জন্য ব্যয় হবে, যেন ফিলিস্তিনে আমাদের ভাই-বোনদের বক্ষ ও মস্তকের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। মুসলিমদের সমুদ্রসীমায় যে সমস্ত ক্রুসেডার যুদ্ধবিমান প্রবেশ করবে, সেগুলোকেও নিশানা করুন। জাযীরাতুল আরবের মুজাহিদীন জেগে উঠুন। পূর্ব আফ্রিকা, ইসলামী মাগরেব, ভারতীয় উপমহাদেশ এবং রিবাতের ভূমি শামের মুজাহিদীন সকলেই জেগে উঠুন। সকল ফ্রন্টের যোদ্ধারা অগ্রসর হোন। ইসরাইলকে দেয়া পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন আপনারা প্রতিরোধ করুন। আপনাদের ভাইদের পাশে দাঁড়াবার তো এখনই সময়। কতই না নিকৃষ্ট মুসলিম হব আমরা, যদি আমাদের অঞ্চল থেকে আমাদের ভাইয়েরা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
পরিশেষে মুসলিম উম্মাহকে বলবো, এই উম্মাহর শত্রুরা কাগজের তৈরি বাঘ। তাই তো আফগানিস্তানে সাম্রাজ্যবাদের সমাধি রচিত হয়েছে এবং ক্রুসেডার ন্যাটো জোট সেখান থেকে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। এখন পুনরায় ইসলামী মাগরেব অঞ্চল থেকে লাঞ্ছিত হয়ে সরে যেতে আরম্ভ করেছে। পূর্ব আফ্রিকায় জাইশুল উসরাহ’র বীরদের হাতে মার খেয়ে তারা দিশেহারা। জাযীরাতুল আরব, রিবাতের ভূমি শাম এবং অন্যান্য ফ্রন্টেও জিহাদ চলমান। এদিকে সাম্প্রতিককালে আমরা সরাসরি প্রত্যক্ষ করছি জায়নবাদী শত্রুর কল্পরাজ্য ধ্বংসের দৃশ্য। অথচ তারা দাবি করে এসেছে: গাজা উপত্যকায় ‘তুফানুল আকসা’ যুদ্ধে অবরুদ্ধ মুজাহিদীনের হাতে তাদেরকে পরাজিত করা যাবে না। তাই এখনই সমন্বিত প্রয়াস গ্রহণের সময়। সকল ফ্রন্ট ও যুদ্ধ ঘাঁটিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের সকলের উচিত আকসার স্বাধীনতার জন্য ময়দানে নেমে আসা। কারণ আল-আকসা স্বাধীন হলেই ইনশাআল্লাহ জুলুম-নির্যাতন থেকে গোটা উম্মাহ মুক্তি পাবে।
وَاللّهُ غَالِبٌ عَلَى أَمْرِهِ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُونَ
অর্থঃ আল্লাহ নিজ কাজে প্রবল থাকেন, কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না। (সূরা ইউসুফ - ১২:২১)
হে আল্লাহ আপনি ফিলিস্তিনের সর্ব স্থানে মুরাবিত, মুজাহিদ ভাইদেরকে সাহায্য করুন। হে আল্লাহ গাজা উপত্যকায় আমাদের ভাইদের তীর ও গুলির নিশানা এবং তাদের রায় ও মতামতকে লক্ষ্যভেদ করার তাওফীক দান করুন। হে আল্লাহ আপনার পক্ষ থেকে আসমানি বাহিনী পাঠিয়ে তাদেরকে সাহায্য করুন। হে আল্লাহ! বিজয়, সাহায্য, অবিচলতা ও প্রশান্তির ফেরেশতাগণকে তাদের ওপর অবতীর্ণ করুন। হে আল্লাহ! আপনি তাদেরকে শক্তিশালী করুন, আপনার বিশেষ হেফাযতে তাদেরকে নিয়ে নিন। আপনি তাদের তত্ত্বাবধায়ক হয়ে যান। তাদের ব্যাপারে দয়া ও নম্রতার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন- হে দয়াময় অনুগ্রহশীল, রব।
اللهم مُنزِلَ الكتابِ، ومُجرِيَ السَّحاب وهازمَ الأحزابِ، اهزِمْهم وانصُرْنا عليهم
অর্থ: “হে কিতাব অবতীর্ণকারী, মেঘ সঞ্চালনকারী এবং শত্রু সকলকে পরাজিতকারী! আপনি তাদেরকে পরাজিত করুন এবং তাদের মুকাবিলায় আমাদেরকে সাহায্য করুন।”
হে আল্লাহ আপনি দখলদার ইহুদী এবং অত্যাচারী খ্রিস্টানদেরকে পরাজিত করুন, যারা মুসলিমদের ওপর নিকৃষ্ট শাস্তি চাপিয়ে দিয়েছে। হে আল্লাহ আপনি তাদেরকে প্রকম্পিত করুন এবং তাদেরকে হত্যা অথবা বন্দী করার ও ক্ষতিসাধনের তাওফীক মুসলিমদেরকে দান করুন। 'আল্লাহু আকবার' নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব মহান। শুধু আল্লাহর জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য এবং ঈমানদারদের জন্যই সম্মান ও গৌরব। নিশ্চয়ই এই দাওয়াত জিহাদের। বিজয় কিংবা শাহাদাতের। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন - সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি বিশ্বজাহানের রব।
وآخر دعوانا ان الحمد لله رب العالمين
রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরী অক্টোবর, ২০২৩ ইংরেজী |
مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
پریس ریلیز – قاعدة الجهاد | القيادة العامة
أَلا إِنَّ نَصْرَ اللّهِ قَرِيبٌ
طوفان الأقصى
কায়িদাতুল জিহাদ - কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
أَلا إِنَّ نَصْرَ اللّهِ قَرِيبٌ
"শুনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে"
‘তুফানুল আকসা’
Press Release –
"Listen, surely the help of Allah is very near"
AL-AQSA FLOOD
روابط بي دي اب
PDF (719 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৭১৯ কিলোবাইট]
https://archive.org/download/tufanul-aqsa/AQC%20-%20TufanulAqsa%20-%201.pdf
https://www.file-upload.org/tbkvgvtn07sr
https://www.mediafire.com/file/n98lsuxfi8rjbxc/AQC+-+TufanulAqsa+-+1.pdf/file
https://tufanul.files.wordpress.com/2023/10/aqc-tufanulaqsa-1.pdf
https://mega.nz/file/gucUFCSA#Z3mJwBKNWHTsFoKgsyIlR_gJvot3BC4ozEyWVZZldZI
روابط ورد
Word (710 KB)
ওয়ার্ড [৭১০ কিলোবাইট]
https://archive.org/download/tufanul-aqsa/AQC%20-%20TufanulAqsa%20-%201.docx
https://www.file-upload.org/ka2ftmoxlq9o
https://www.mediafire.com/file/he8hc2ia7d9207c/AQC+-+TufanulAqsa+-+1.docx/file
https://tufanul.files.wordpress.com/2023/10/aqc-tufanulaqsa-1.docx
https://mega.nz/file/tqsxzIAT#OaInwMeIB3M2pVWqTyfVcrNcwaLHODEScW6DtLPR5Q4
روابط الغلاف
Banner [2 MB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [২ মেগাবাইট]
https://archive.org/download/tufanul-aqsa/tufanul%20aqsa%201.png
https://www.file-upload.org/g6vq2ytx6jvr
https://www.mediafire.com/file/x65cbiv7favx0r8/tufanul+aqsa+1.png/file
https://tufanul.files.wordpress.com/2023/10/tufanul-aqsa-1.png
https://mega.nz/file/smFk0TKb#jmKMbbIJWC-3rhZmgeWqG6nDovWkB74nBwm4AiEzCN4
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent